বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো কবে

  •    
  • ৫ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:৫৬

শিক্ষকরা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ ঈদ বোনাস ১৭ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। এ ছাড়া আরও নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার তারা। তাই মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে অবশ্যই শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ও ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে আলাদা বেতন কাঠামোর দাবি তাদের।

পাশের দেশ ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন অনেক কম। কম বেতন নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ আর হতাশা। ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে সব স্তরের শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু ১১ বছরে এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, অতিদ্রুত আলাদা বেতন কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে এর প্রভাব পড়বে গোটা শিক্ষাব্যবস্থায়।

এমন বাস্তবতায় ৫ অক্টোবর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার কেন্দ্র শিক্ষকরা’। মহামারি করোনার কারণে দেড় বছরে শিক্ষাব্যবস্থার যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে শিক্ষকরাই মূল ভূমিকায় থাকবেন– এটাই জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেসকোর বার্তা।

১১ বছরেও শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়নি কেন- এমন প্রশ্নে কোনো উত্তর দিতে চাননি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত।

দেশের শিক্ষকসমাজ আর্থিক বৈষম্যের শিকার জানিয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের মুখপাত্র মো. নজরুল ইসলাম রনি বলেন, ‘করোনার এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ ঈদ বোনাস ১৭ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। এ ছাড়া আরও নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার তারা। তাই মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে অবশ্যই শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ও ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে আলাদা বেতন কাঠামো করতে হবে।’

একই সুরে কথা বললেন নরসিংদীর সরদার আছমত আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে শিক্ষকরা সমাজে মূল্যায়িত হচ্ছেন না। যে কারণে শিক্ষকরা সঠিকভাবে পাঠদানে মনোনিবেশ করতে পারছেন না। এভাবেই জাতি পিছিয়ে পড়ছে। আমরা অবিলম্বে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো চাই।’

সমাজে শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানালেন এসওএস হারমান মেইনার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রাফিয়া আক্তার।

তিনি বলেন, ‘একটি জাতি গঠনে মূল ভূমিকা পালন করে শিক্ষকসমাজ। তাই সমাজে শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। আর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের শিক্ষকরা কম সম্মানী পান। আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার নজর দেয়া উচিত।’

আর্থিক দুরবস্থা নিরসন না করলে শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সেবা পাওয়া সম্ভব না বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দা তাহমিনা আক্তার।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই বাড়াতে হবে। শিক্ষকরা যদি এখনকার মতো নামমাত্র বেতন পান, তাহলে তাদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা আশা করা উচিত হবে না। তাই আমি মনে করি, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো থাকা উচিত।’

একই কথা বললেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাকাঠামো বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব যাদের, অর্থাৎ শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের শিক্ষকদের বেতন তুলনামূলকভাবে কম। তাই ২০১০ সালের শিক্ষানীতির আলোকে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল করা উচিত।’

শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘মেধাবীদের শিক্ষকতায় আনতে হলে সম্মানজনক সুবিধা দিতে হবে। তারা যাতে দুশ্চিন্তামুক্ত থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের শিক্ষায় বিনিয়োগ এখনও কম, এটাই বড় সমস্যা।’

এ বিভাগের আরো খবর