বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিমান ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘নির্বিচারে হত্যার’ স্বরূপ উন্মোচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন ও সাইডলাইনে উচ্চপর্যায়ের অংশ নেয়া আলোচনার বিষয়ে জানাতে সোমবার সন্ধ্যায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সেই সময় বারবার ক্যু হয়েছে। ক্যুর নামে শুধু এয়ারফোর্সই না, সেনাবাহিনীরও বহু সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এদের পরিবার লাশ তো পায়নি। বরং এরা যে গুম হয়ে গেল এটা নিয়ে কেউ কোনো কথাও বলেনি। এত বছর পর চেতনা এসেছে। এতোকাল কেন সবাই এটা ভুলে ছিল?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই এটা করেছিলেন। সে সময় অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকেও হত্যা করা হয়। তাকে (জিয়াউর রহমান) এমন ফেরেশতা বানানো হলো শেষপর্যন্ত স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে গেল।
‘মিউটিনি বিচারের নামে ১১ অফিসারকে যে ফাঁসি দিল। জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় ক্যু এবং বিভিন্ন কারাগারে ফাঁসির হিসাব কেও নেয়নি। আরও তথ্য বের হওয়া দরকার। এই পরিবারগুলো তো কিছু পায়নি। তাদের কথা কেউ জানতেও চায়নি।’
সরকারপ্রধান বলেন, এখন কমিশন গঠনের যে দাবি উঠেছে, আমি মনে করি এজন্য ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান সামরিক প্রশাসক হয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন। তার পরের বছর তিনি রাষ্ট্রপতি হন।
জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পার বারবার সেনা-অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়। সেই চেষ্টার কারণে অসংখ্য সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের জীবন দিতে হয়। বিচারের নামে প্রহসন করে ‘নির্বিচারে হত্যার’ অভিযোগ ওঠে জিয়ার বিরুদ্ধে।
১৯৭৬ সালে কর্নেল তাহেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয় জিয়া সরকার। হাইকোর্ট ওই রায়কে অবৈধ ঘোষণা করেছে।
সে সময় অসংখ্য লোককে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা যদি বিভিন্ন জেলখানায় খোঁজ করেন, কোন জেলে কতজনকে এভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তাহলে দেখবেন এই রকম হাজার হাজার মানুষকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে।’