বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নীতিমালার আওতায় খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বা এককালীন পরিশোধ (ওয়ান টাইম এক্সিট) সুবিধার সময় আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ শিরোনামে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে এলেও ঋণ গ্রহীতার ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদের ঋণ পরিশোধ সহজ করা হয়েছে।
নতুন নির্দেশনায়, এককালীন এক্সিট সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ ও বিনিয়োগের বিপরীতে প্রদেয় অর্থ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে এককালীন এক্সিট সুবিধা বহাল থাকবে।
এ সুবিধা এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
চিঠিতে তিনি জানান, বিশেষ সুবিধায় সুদ মওকুফ ও মওকুফোত্তর অবশিষ্ট ঋণ এককালীন পরিশোধের জন্য (এক বছর মেয়াদে) অনেক গ্রাহকের আবেদন ব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু মহামারির কারণে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারেননি।
এমন পরিস্থিতিতে যেসব গ্রাহক বা প্রতিষ্ঠান বিশেষ সুবিধার আবেদন করে ব্যাংকের বোর্ডের অনুমোদন পেয়েছিলেন, কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এক বছর সময়ে ঋণের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে পারেননি, তাদের বিশেষ বিবেচনায় আরও এক বছর সময় বাড়ানোর দাবি করা হয়।
ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সুবিধা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
খেলাপি ঋণ কমাতে সরকারের ইচ্ছায় ২০১৯ সালের ১৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়।
নীতিমালা অনুযায়ী, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সরল সুদে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ টানা ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়।
এ সুবিধার আওতায় স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণ খেলাপি তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেয়া হয়।
এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হয় ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এক কালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যত খেলাপি ঋণ ছিল তার হিসাব করা হয়।
কোনো ঋণ খেলাপি যদি মনে করে এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন, তাহলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয় ওই বিশেষ সুবিধায়।
এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে।
গ্রাহক কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।