নিজেদের একমাত্র খেলার মাঠ বাঁচাতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের পর এবার পুরান ঢাকার স্থানীয়দের নিয়ে সংহতি সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার ধূপখোলা মাঠের সামনে প্রগতিশীল ছাত্রজোটে আয়োজিত এ সংহতি সমাবেশ বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
এতে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী-এলাকাবাসী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের থাকার জায়গা দেয়নি। তবে পুরান ঢাকাবাসী তাদের থাকতে দিয়েছেন। এখন মাঠ রক্ষায়ও তাদের সমর্থন দরকার। এই মাঠ রক্ষার দায়িত্ব যেমন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তেমনি পুরান ঢাকাবাসীরও।
সমাবেশে কবি নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি আমরাও ব্যবহার করি। এছাড়া এলাকার শিশুরাও এই মাঠে খেলে। এখন সিটি করপোরেশন এই মাঠ দখল করে তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে এই মাঠ দখলমুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, ‘এই মাঠ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়। এটি এলাকাবাসীরও মাঠ। এই মাঠের সঙ্গে লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস জড়িত । আমরা এর আগে যখন হলের জন্য মাঠে নেমেছিলাম, তখন দেখেছি একটি পক্ষ এলাকাবাসীকে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘এবার সেটি হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী একসঙ্গে মাঠ দখলমুক্ত করবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ভোটের সময় ছাড়া পুরান ঢাকায় আসেন না। তিনি উন্নয়নের নামে এখানকার জীবনে নাভিশ্বাস আনতে চান।
‘এখানে যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রয়েছে তাদের কাছে থেকে স্থানীয়রা ন্যায্য দামে জিনিসপত্র কিনতে পারে। সেখানে সুপারশপ করে জিনিসের দাম বাড়াতে চায়। এরকম ঘটলে এই মেয়রকে পুরান ঢাকায় অবাঞ্ছিত করা হবে।’
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের জবি সংসদের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের মাঠে যদি সিটি করপোরেশন কাজ চালিয়ে যেতে থাকে, তাহলে এর জবাব শিক্ষার্থীরা দিবে। বর্তমানে ক্যাম্পাস বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা থাকায় সিটি করপোরেশন এই কাজ করতে পারছে। ক্যাম্পাস যদি খোলা থাকতো তাহলে তারা এই সাহস দেখাতে পারতো না।’
১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করে এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহারের মৌখিক অনুমতি দেন। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি ধূপখোলা মাঠকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন এই মাঠেই হয়েছিল।