আফগানিস্তানে উগ্রবাদী ধর্মীয় গোষ্ঠী তালেবানের উত্থানে বাংলাদেশে ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সার্কভুক্ত দেশটির ক্ষমতাকাঠামোতে এই পরিবর্তনের প্রভাব যেন বাংলাদেশে না পড়ে, সে জন্য সরকার সতর্ক বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে সোমবার ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তালেবানকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।’
প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরের পর বরাবর গণমাধ্যমের সামনে আসেন। লিখিত বক্তব্যে সফরের বিষয়ে বিবৃতি থাকে। তবে গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন রাখেন সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে।
অন্যান্য নানা প্রশ্নের পাশাপাশি আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন এক সংবাদমাধ্যমকর্মী।
গত ১৫ আগস্ট দেশটির রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। ৯০ দশকের শেষ ভাগেও তারা যখন দেশটির নিয়ন্ত্রক ছিল, তখন সারা বিশ্বেরই উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছিল গোষ্ঠীটি।
এবার তালেবান ক্ষমতায় আসার পর নিজেদের পাল্টানোর ঘোষণা দিলেও পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে হাত-পা কাটার মতো শাস্তি ফিরেছে। কথা দিয়েও নারীদের কাজ করতে দেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদেরকে পড়তে দেয়া হলেও স্কুলে যেতে দেয়া হয়নি। দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ক্রেনে ঝুলিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
আফগানিস্তানে এই পরিবর্তন অতীত অভিজ্ঞতার কারণে বাংলাদেশের জন্যও উদ্বেগের। ৯০ দশকে দেশে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করে আফগানফেরত যোদ্ধারা। এবারও বহু তরুণ দেশটিতে যুদ্ধ করতে গেছে বলে পুলিশের বক্তব্যে উঠে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভয় পেলেই ভয়, না পেলে কিছু নয়। একসময় যখন তালেবানের উত্থান হলো, তখন অনেকে আফগানিস্তান থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসে। এ জন্য দেশে জঙ্গিবাদ তৈরি হয়। এর জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
‘এটা যে মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, মানুষ যে কষ্ট পায়, এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। আমরা সতর্ক আছি এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি যেন এ ঘটনার কোনো বাতাস আমাদের এখানে না আসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ধরে রেখেই আমাদের এখানে যেন ওই ঘটনা না ঘটে এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করছি। জনগণই মূল শক্তি। জনগণ শান্তি চায়। আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় থাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া এসেছে। এখন আর হাহাকার নেই। ভবিষ্যতে আরও উন্নত জীবন তারা পাবে।’