মাদারীপুরে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে অন্তত দুই কোটি টাকার ইলিশ বেচাকেনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শহরের পুরানবাজার মাছের আড়ত, রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর এবং বেপারিপাড়া মোড়ে রোববার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ইলিশ কেনাবেচার ধুম পড়ে।
আগামী ২২ দিন ইলিশ আহরণ, বিপণন ও বাজারজাত বন্ধ হওয়ার ঘোষণায় এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
রোববার বিকেল থেকেই পুরানবাজার মাছের আড়তে ইলিশ মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। ক্রেতারাও আসতে শুরু করেন ছোট-বড় সাইজের ইলিশ কিনতে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর ইলিশের সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ কারণে দাম বেশি।
একই চিত্র দেখা গেছে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর ও রাজৈর বেপারিপাড়া মোড়ে। সেখানে প্রায় শত মণ ইলিশ বিক্রি হয়েছে।
পুরানবাজারে মাছ কিনতে আসা গৃহিণী মরিয়ন নেছা বলেন, ‘প্রায় এক মাস ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে না। তাই মাছ কিনতে আসছি। গতবার এক কেজি সাইজের ইলিশ ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, এবার সেই ইলিশ ৯০০ টাকার ওপরে। যে কারণে মাত্র ৫ কেজি ইলিশ কিনছি। না হলে আরও বেশি কিনতাম।’
মাছ কিনতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী মনির হোসেন। তিনি বলেন বলেন, ‘আগে জানলে এ রাতের জন্য দেরি করতাম না। মানুষ হুজুগে মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। আমিও আসছি, এখন দাম দেখে আর কিনলাম না। আগামীতে আর এই ভুল করব না।’
স্থানীয় এক ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী জানান, ‘যত ইলিশ সংগ্রহে ছিল সবই বিক্রি করে দিচ্ছি। কারণ মাছ মজুতও রাখা যাবে না। ক্রেতারাও আসছেন, আমরাও বিক্রি করছি।’
মাদারীপুর পুরানবাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবছর নিষিদ্ধ সময়ের আগের রাতে ইলিশ মাছ বিক্রির ধুম পড়ে। সব মাছ ব্যবসায়ী সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার আগ পর্যন্ত ইলিশ বিক্রি করেন। এ আড়তে প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার ইলিশ বিক্রি হয়েছে। আর টেকেরহাটেও প্রায় এক কোটি টাকা ইলিশ বিক্রি হয়েছে। তবে আমরা সংরক্ষিত সময়ে কোনো ইলিশ কেনাবেচা করি না।’
মাদারীপুর জেলা মৎস্য অফিস জানান, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। তাই সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় বন্ধ থাকবে। যদি কেউ এই আইন অমান্য করে তাহলে জেল-জরিমানা করার বিধান রয়েছে।