৬০০ ফুট দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়, বর্ষায় থাকে হাঁটুপানি। আশপাশের সাত থেকে আটটি গার্মেন্টসের শ্রমিকসহ কয়েক লাখ মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ ছিল না এই রাস্তার কারণে।
রাস্তা সংস্কারের জন্য জনপ্রতিনিধির কাছে একাধিকবার গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাই স্থানীয় একজন একেবারে নিজ উদ্যোগে ও খরচে সংস্কার করেছেন সাভারের আশুলিয়ায় ইউনিক বাসস্ট্যান্ড থেকে ভূঁইয়াপাড়া এতিমখানা মোড় পর্যন্ত সেই রাস্তা।
আলম ভূঁইয়া নামের ওই ব্যক্তি এক মাস ধরে ইট-বালি ফেলে রাস্তা উঁচু করেছেন। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন সংস্কার করে দিয়েছেন।
তার এমন কাজে খুশি সড়কটিতে চলাচলকারী ও স্থানীয়রা।
স্থানীয় এক দোকানি বলেন, ‘প্রায় ৫ থেকে ৭ বছর ধইরা রাস্তাটা ভাঙা, গাতা (গর্ত) ছিল। অল্প বৃষ্টি হইলেই পানি জইমা যাইত। রাস্তাটা দিয়া চলাচল করা যাইত না। এতগুলা গার্মেন্টসের শ্রমিক খুব কষ্ট কইরা চলত।’
খারাপ রাস্তার কারণে ভাড়াটিয়া পাওয়া যেত না বলে অভিযোগ করেন দ্বীন ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘অনেক দিনের জলাবদ্ধতার কারণে আমরা এলাকাবাসী অনেক ভোগান্তিতে ছিলাম। আশপাশের অনেক বাড়িঘরে ভাড়াটিয়া আসত না, খালি থাকত। এখানকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে যাওয়া হইছিল। তারা কোনো আশ্বাস দিতে পারে নাই।
‘তারপরে আমাদের এলাকার আলম ভূঁইয়া রাস্তাটা সংস্কারের উদ্যোগ নেন। সকলকে ডাইকা নিয়া বইসা নিজের টাকায় সংস্কার করেন। এখন রাস্তাটা দিয়া সবাই ভালোভাবে চলাচল করতাছে। বাড়িঘরে ভাড়াটিয়ারা আসতেছে।’
নিজ খরচে রাস্তা সংস্কার করা আলম ভূঁইয়ারিকশাচালক মোবারক হোসেন বলেন, ‘যাত্রী নিয়া তো দূরের কথা, খালি রিকশা নিয়াই যাওয়া যাইত না। জাগায় জাগায় গর্ত। তার ওপর হাঁটু সমান পানি। গর্তে পইড়া রিকশা ভাইঙ্গা যাইত। এখন ঠিক করার পর অনেক আরামে চালাইতেছি।’
রাস্তা সংস্কারকারী আলম বলেন, ‘এমন অবস্থা হইছিল, এই রাস্তা দিয়া ট্রাক যাওয়ার সাহস পাইত না। এই পরিমাণ গর্ত আর পানি থাকত। পরে আমি চেয়ারম্যান, মেম্বার, ভাইস চেয়ারম্যান ওনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। অনেক দৌড়ঝাঁপ কইরাও কোনো ফল পাই নাই।
‘পরে আমি নিজেই উদ্যোগ নিয়া রাস্তাটা ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিছি। এতে আমার প্রায় ৬ লাখ ১০ হাজার ট্যাকা খরচ হইছে। যদিও এখনও কাজ শ্যাষ হয় নাই। ৮ লাখ ট্যাকার মতো খরচ হইব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে যদি আর একটু ভালো করে কিছু করে দেয় তাহলে খুব উপকার হতো। বিশেষ করে একটা ড্রেন খুবই দরকার। আমি কোনোমতে এখন সংস্কার করছি।’