ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন।
বরিশালে কীর্তনখোলা নদীতে নগরীর ডিসি ঘাটসংলগ্ন এলাকা থেকে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এই অভিযানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
এ সময় তিনি বলেন, ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে দেশের নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ মৌসুমে কেউ মাছ আহরণে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলে পরিবার ২০ কেজি করে চাল পাবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে বরিশাল জেলায় ৫১ হাজার ৭০০ জেলে পরিবারকে ১ হাজার ৩৪ টন চাল দেয়া হবে। এই চাল জেলেরা যাতে দ্রুত পান সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশালের পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
জেলা টাস্কফোর্সের উদ্যোগে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন ও নৌ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে চাঁদপুরে।
শহরের তিন নদীর মোহনা বড়স্টেশন মোলহেডে সোমবার সকালে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন নদীতে কোনোভাবেই জেলেদের নামতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। যদি কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রাকৃতিক সম্পদ ইলিশ রক্ষায় শুধু জেলে নয়, সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি মা ইলিশ রক্ষা করা মানে ১২ থেকে ১৩ লাখ ইলিশ মাছ রক্ষা করা। তাই এই মুহূর্তে যদি আমরা একটু সচেতন হই এবং মা ইলিশ নিধন না করি তাহলে আগামীতে এর সুফল আমরা পাব এবং ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ঘাটে আসবে। সে ক্ষেত্রে ইলিশের দাম অনেক কমে যেতে পারে। আর দাম কমলে আমরা সবাই মিলেমিশে ইলিশ খেতে পারব।’
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুধু নদীতে নয়, স্থলভাগেও যাতে কেউ মাছ বিক্রি করতে না পারেন সে জন্য নজরদারি রাখা হবে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘শুধু জেলে নয়, মা ইলিশ রক্ষা বাস্তবায়ন করতে আমাদের সকলের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। সরকার ঘোষিত এই নির্দেশনা যদি আমরা মেনে চলি তাহলে এর সুফল আমরা নিজেরাই ভোগ করব। নদীতে মাছ ধরা অবস্থায় জেলে আটক হলে জনপ্রতিনিধি যাতে তার পক্ষে সুপারিশ করতে না আসেন।
এ সময় ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান, নৌপুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, কোস্ট গার্ড স্টেশন কমান্ডার রুহান মোর্শেদ, চাঁদপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ ভট্টাচার্য, সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুর রহমান, চাঁদপুর পুলিশ নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম, কান্ট্রিফিশ মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় মা ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশসহ সকল ধরনের মাছ ধরা নিষেধ। এ সময় ৪৪ হাজার জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে।