মাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তিন সন্তানের বিরুদ্ধে।
পুলিশ বলছে, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে।
তিন ভাইয়ের হাত থেকে মাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ওই বৃদ্ধার আরেক ছেলে ইসমাইল সওদাগর।
মারধরের অভিযোগ এনে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বৃদ্ধা লুৎফুন্নেছা বাঁশখালী জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেছেন তিন সন্তানের বিরুদ্ধে। এ তথ্য সোমবার জানাজানি হয়।
মামলার আসামিরা হলেন মো. আলী, মো. বেলাল ও মো. হোসাইন।
এজাহারে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্ত ৩ ছেলে মায়ের সম্পত্তি কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে ঘরে ঢুকে মাকে বের করে দেন মো. আলী, মো. বেলাল ও মো. হোসাইন।
পরে মাটির দেয়াল, টিনের বেড়া নষ্ট করে মায়ের সংরক্ষিত ১৫ আড়ি ধান, ৫০ কেজি ওজনের ১ বস্তা চাল লুট করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। মো. হোসাইন তার মাকে পেটে-পিঠে কিল-ঘুষি মেরে মারাত্মক জখম করেন। মো. আলী তার মায়ের চেন ছিনিয়ে নেন। এ সময় মায়ের চিৎকারে ইসমাইল এগিয়ে এলে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তাকে জখম করা হয়। গুরুতর আহত মা-ছেলেকে উদ্ধার করে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান ইসমাইলের স্ত্রী।
বাদী লুৎফুন্নেছা বলেন, ‘আজ থেকে ৯ মাস আগে আমার স্বামী মারা গেছে। আমার ছয় ছেলে ও দুই মেয়ে। ৭ জনের বিয়ে হয়ে গেছে। একজন অবিবাহিত। তাদের আলাদা বাড়ি আছে। আমি আমার স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়িতে একা বসবাস করছিলাম। ছেলেরা আমার ঘর-বাড়ি ভেঙে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিলে আমাকে মারধর করে। আমার মেজো ছেলে ইসমাইল তা দেখে প্রতিবাদ করলে তাকেও মেরে আঙুল ভেঙে দেয় ও লোহার রড দিয়ে মেরে জখম করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাকি জীবন কীভাবে কাটাব, কার কাছে যাব, তা নিয়ে চিন্তিত। আমি সত্যিই অভাগী। ৮ সন্তানের মা হয়েও আজ আমি দিশাহারা। আমি এমন সন্তানদের বিচার চাই।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত মো. আলী ও মো. হোসাইনের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত আরেক ছেলে মো. বেলালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি সবার অজান্তে মেজো ভাই ইসমাইলের নামে বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন মা। এ নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ছনুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইউনুস বলেন, ’বিগত দিনে আমরা তাদের পারিবারিক অনেক সমস্যা মীমাংসা করে দিয়েছি। এবারও বিরোধ মিটমাট করার জন্য মা-ছেলেকে ডেকেছি। কিন্তু তারা আসেননি।’