বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আছর উদ্দিন বাউলের পাশে কেউ নেই

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২১ ১০:৪৮

পথে ঘাটে ও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গান গেয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসার চলে পথ বাউল আছর উদ্দিনের। তার অভিযোগ, এত বছর ধরে গান গাইছেন কেউ তাকে সহযোগিতা করেনি। না শেখ হাসিনা সরকার, না খালেদা জিয়ার সরকার। বৃদ্ধ বয়সে তার কণ্ঠে এখন কেবল আক্ষেপের সুর।

লালমনিরহাটের কুলাঘাট ইউনিয়নের ধরলার চড়ে থাকেন বৃদ্ধ আছর উদ্দিন। তার পাঁচ সদস্যের পরিবারের তিন জনই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি আছর উদ্দিনই। সংসারের ঘানি টানতে তার পুঁজি গলার সুর ও হাতের দোতারা। এই দুই মিলে আছর উদ্দিন মানুষের কাছে পরিচিত ‘আছর উদ্দিন বাউল’ নামে।

পথে ঘাটে ও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে গান গেয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসার চলে আছর উদ্দিনের। তার অভিযোগ, এত বছর ধরে গান গাইছেন কেউ তাকে সহযোগিতা করেনি। না শেখ হাসিনা সরকার, না খালেদা জিয়ার সরকার। জীবনের ৭০ বছর পার করে তার কণ্ঠে এখন কেবল আক্ষেপের সুর।

দোতারা বাজিয়ে গান গেয়ে গেয়ে নিউজবাংলাকে আছর উদ্দিন বলেন, ‘আমার নাম আছর উদ্দিন। বাড়ি চর কুলাঘাট, চার নম্বর চর এলাকায় থাকি। নদী ভাঙা মানুষ আমি। আমার সব কিছু ধরলা নদীতে ভেসে গেছে। আমার একটা ছেলেও নেই যে আমাকে দেখাশুনা করবে। আমার দুইটি মেয়ে তারাও প্রতিবন্ধী।

‘বড় মেয়েটা আমার মারা গেছে। তার দুইটা বাচ্চা আমি মানুষ করতেছি। আমি এতদিন থেকে গান গাইলাম শেখ হাসিনাও আমাকে কিছু দিল না, খালেদা জিয়াও কিছু দিল না। বঙ্গবন্ধুর গান আমি গাইলাম, কিন্তু কেউ কিছু দিল না।’

গানের সুরে সুরে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাউল আছর উদ্দিন মানুষের দ্বারে দ্বারে দুয়ারে দুয়ারে গান গাই; আর এক টাকা দুই টাকা দেয়। সারা দিনে যা পাই তাই দিয়া আমি জীবন মেকাপ করি। কত কী করছি, কিন্তু আমি কোন অনুদান পাইলাম না। কারণটা কি? না আমি ছোট বাউল? সে জন্য আমি কিছু পাই না।’

আছর উদ্দিনের পরিবার

আছর উদ্দিন বলেন, ‘আমার কিছু অনুরোধ বুড়াতি বয়সে, আমি মানুষের ঘরে ঘরে গান গাই, আমার চোখে পানি আসে। আমার সাতটা লোক খানেওলা। আমার একলা জীবন। আমি নদীর বালুর চরে ঘর তুলে আছি। মানুষের জমিনে। এখনে উঠায়ে দিলে কিছু করার নাই। ওয়াপদায় ছিলাম। ওয়াপদা থেকে তুলে দিল সরকার। আমাকে কে দেখে। আমি কোনো অনুদানও পাইনা। আমি নিজের বলে দোতারা ডাঙ্গেয়া গান গাই। এই পর্যন্ত আমার প্রার্থনা।’

আছর উদ্দিন বাউল জানান, ছোট থেকে মানুষের বাড়িতে কাজ করে চলেন তিনি। তার বাবা-মা খুব অভাবী ছিল। এসেছেন পাবনা থেকে।

তিনি বলেন, ‘কামলা খাটতে খাটতে আর আমাদের জানে কুলায় নাই। মানুষের কাজ করে খাচ্ছি। মানুষের গোলামি করি খাচ্ছি। মানুষের কাপড় পরে। আমরা না পাই ভাত, না পাই কাপড়।’

আর্থিক অনটনের কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘এ একটা ঈদ গেল আমি কোনো অনুদান পাইলাম না। কেন? আমাদের বয়স্ক ভাতা হয়েছিল, কিন্তু বয়স্কভাতা পাইলাম না।’

এ বিভাগের আরো খবর