চুয়াডাঙ্গায় ১৮ বছর আগে দুই নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি নিয়েছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার। সেখানে সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে তাদের ফাঁসি কার্যকর করার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পরই দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
আসামিরা হলেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায় লক্ষ্মীপুর গ্রামের কালু নামে পরিচিত মিন্টু ও একই গ্রামের আজিজুল নামে পরিচিত আজিজ।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পান কালু ও আজিজুল। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে শনিবার তাদের সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করেছেন স্বজনরা। তবে গণমাধ্যমের সঙ্গে তারা কথা বলতে রাজি হননি।
আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা গ্রামের দুই বান্ধবীকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাদের দুজনকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলাকাটা হয় ওই দুই নারীর। এ ঘটনায় নিহত একজনের মেয়ে পরদিন আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন, আসামি করা হয় চারজনকে। বিচারকাজ চলাকালীন আসামি মহি অসুস্থ হয়ে মারা যান।
চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই আসামি সুজন, আজিজ ও মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। আসামিপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই রায় বহাল রাখেন।
আসামিপক্ষ মামলাটি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যান। চলতি বছরের ২৬ জুলাই সেখানে আসামি সুজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হলেও অন্য দুজনের রায় বহাল রাখার আদেশ হয়। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গত ২০ জুলাই মুক্তি পান সুজন।
অন্য দুজন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে তা নাকচ হয়।
কারা অধিদপ্তরকে ফাঁসি কার্যকর করতে গত ৬ সেপ্টেম্বর চিঠি দেয় সুরক্ষা সেবা বিভাগ। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ৮ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি গ্রহণ করে।
এর মাধ্যমে ঘটনার প্রায় ১৮ বছর সাজা পেতে যাচ্ছেন আসামিরা।
জেলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান জানান, ফাঁসি কার্যকর করতে আটজন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সে সেময় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনের।