এক রাতের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রংপুর শহরের বেশিরভাগ এলাকা। বাড়িঘরেও ঢুকে পড়েছে পানি।
রোববার রাত ১২টার পর থেকে সোমবার সকাল ৭টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়েছে জেলা শহরে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, গত ৭ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২২২ মিলিমিটার।
তিনি জানান, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর এক রাতে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তাতে রংপুর শহর পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিচু এলাকাগুলো এখন পানিতে থইথই। কোনো কোনো এলাকায় হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি।
নগরীর নিউ জুম্মাপাড়া, পূর্ব জুম্মাপাড়া, আদর্শপাড়া, কামারপাড়া, কামাল কাচনা, মাহিগঞ্জ, বোতলা, নগর মীরগঞ্জ, শালবন, মিস্ত্রিপাড়া, কলাবাড়ি দর্শনা, মর্ডান মোড় সংলগ্ন বিভিন্ন মহল্লা, মুন্সিপাড়া, হনুমান তলা, মুলাটোল, মেডিক্যাল পাকার মাথা, জলকর এলাকায় রাস্তাঘাট-দোকানপাট ও ঘরে পানি ওঠায় মানুষের দিন শুরু হয়েছে দুর্ভোগে। যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে প্রায় সব রাস্তাতেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর শহরের বুক চিরে যাওয়া ১৬ কিলোমিটারের শ্যামা সুন্দরী খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভারি বৃষ্টি হলে পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে।
কামাল কাছনা এলাকার আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, দেশের উঁচু এলাকারগুলোর অন্যতম রংপুর। তিস্তা নদী দূরে, খানিক দূরে ঘাঘট নদী থাকলেও শহরে পানি ওঠে না, কিন্তু গেল বছর হঠাৎ অবিরাম বৃষ্টিতে শহরে বন্যা হলো। এবারও একই অবস্থা।
তিনি বলেন, ‘শহরের মধ্যে শ্যামা সুন্দরী খাল আর কেডি খাল আছে। এই দুটি খাল সংস্কার না করায় এই অবস্থা হচ্ছে।’
নগরীর সেনপাড়া এলাকার মেছবাহুল ইসলাম জানান, ‘রাত থেকে বৃষ্টিতে তাদের ঘরে পানি ঢুকেছে। এখন আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, ‘গত বছরও এই রকম বৃষ্টি হয়েছে। তবে, এখন পর্যন্ত যেসব এলাকায় পানি উঠেছে তা নিচু এলাকা। আমি সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছে যাতে করে পানিবন্দি মানুষজনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হয়। আমরা এরই মধ্যে খোঁজ খবর রাখতে শুরু করেছি।’