বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শরীয়তপুরে মাছচাষ বেড়েছে ১২০ শতাংশ

  •    
  • ৪ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:৩১

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শরীয়তপুর জেলা মাছ চাষ ও উৎপাদনের জন্য একটি উপযোগী স্থান। পুকুর ও প্লাবনভূমিতে মাছ চাষ করে মানুষ সহজে লাভবান হতে পারে।’

শরীয়তপুর জেলার নদী ও পুকুরে গত ১০ বছরে মাছের উৎপাদন ১২০ শতাংশ বেড়েছে বলে জেলা মৎস্য বিভাগের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

২০১১ সালে মাছের উৎপাদন হয়েছিল ১২ হাজার ১৯৫ টন, যা ২০২০ সালে বেড়ে হয়েছে ২৬ হাজার ৭৬০ টনে। অর্থাৎ উৎপাদন বেড়েছে ১৪ হাজার ৫৬৫ টন।

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, শরীয়তপুরে মাছ চাষের জন্য ২ হাজার ৬২৬ হেক্টর জমিতে ১৫ হাজার ১৮২টি পুকুর আছে। ২৪ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে ২২৫টি প্লাবনভূমিতে মাছ চাষ করা হয়; ১ হাজার ২৭ হেক্টর জমিতে ৩৩৪টি ধানক্ষেতে ও ৪ হেক্টর জমিতে ৩০টি গলদা চিংড়ি চাষের হ্যাচারি আছে। এ ছাড়া পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তিনাশা নদীর ১৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদন হয়।

এই জেলার ১১ লাখ মানুষের মাছের চাহিদা ২৫ হাজার ৩১৬ টন। এই চাহিদা পূরণে মাছ উৎপাদন করছেন ১৪ হাজার ৩৭৯ জন চাষি ও ৩২ হাজার ৩২৪ জন মৎস্যজীবী।

সদর উপজেলার ঝিঝারি ইউনিয়নের ভড্ডা গ্রামের নাজির হোসেন খান সৌদি আরবে ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় মন্দা হওয়ায় তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২০১৫ সালে নিজের ফসলি জমি খনন করে কার্প জাতীয় মাছ চাষ শুরু করেন।

ছয় বছরে তিনি ২০ হেক্টর জমিতে মাছ চাষের প্রকল্প সম্প্রসারণ করেছেন। এখন মাছের প্রকল্প থেকে বছরে অন্তত ৩০ লাখ টাকা আয় করেন।

নাজির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে ফিরে আবাসন ব্যবসা শুরু করেছিলাম। সে ব্যবসায় সফলতা আসছিল না। তাই অনেক সাহস করে মাছ চাষ শুরু করি। শুরু থেকেই সফলতা পাই। আমার সফলতার গল্প শুনে অনেক বন্ধুবান্ধব ও স্বজন এখন মাছ চাষ করছেন।’

গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইলিশ অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার খোকা ব্যাপারী জানান, নদীতে মাছের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। গত বছর শরীয়তপুরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছিল ৫ হাজার ৩৬৪ টন। ১০ বছর আগে এত ছিল না। ইলিশের দামও এখন ভালো পাওয়া যাচ্ছে। যারা নদীর পাড়ে ইলিশের আড়ত ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা এখন অনেক ভালো আছেন। জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে।

সদর উপজেলার রুদ্রকর এলাকার দীপঙ্কর দে বাবার সঙ্গে মাছ চাষের ব্যবসা দেখেন।

স্নাতকের এই ছাত্র বলেন, ‘পড়ালেখা শেষ করে চাকরি পাবো এমন নিশ্চয়তা নেই। তাই পরিবারের সিদ্ধান্তে মাছ চাষের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। নিজেদের জমি ছাড়াও জমি লিজ নিয়ে মাছ উৎপাদন করছি। আমাদের এলাকার অনেকেই মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।’

সদরের আদালত এলাকায় ছোট পরিসরে নতুন করে গড়ে উঠেছে সান্ধ্যকালীন মাছের বাজার।

এই বাজারের ব্যবসায়ী মোশাররফ সরদার বলেন, ‘মাছ ব্যবসা করে আমরা ভালো আছি। আড়ত আর জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনে এনে এখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাজার বসাই। ক্রেতারা তাজা ও ভালো মানের মাছ পেয়ে এখানে ভিড় জমান। প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার মাছ কেনাবেচা হয়।’

ভেদরগঞ্জের উপজেলার সাজনপুর গ্রামের দিলিপ কুমারের ২০০ একর জমিতে মাছের খামার আছে। ঢাকাতেও বড় আড়ত করেছেন।

দিলিপ বলেন, ‘মাছ চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। আমার খামারের মাছ চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও ঢাকার ব্যবসায়ীরা কিনে নেয়। এ জেলায় মাছ চাষের আরও সম্ভাবনা আছে। প্রতি বছরই নতুন নতুন মানুষ ব্যবসায় নামছে। তবে মৎস্য খাবারের দাম ও মানের দিকে সরকারের নজর আরও বাড়াতে হবে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শরীয়তপুর জেলা মাছ চাষ ও উৎপাদনের জন্য একটি উপযোগী স্থান। প্রতি বছরই জেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

‘পুকুর ও প্লাবনভূমিতে মাছ চাষ করে মানুষ সহজে লাভবান হতে পারে। অনেকেই মাছ চাষ করে বেকারত্ব দূর করছেন। জেলার অন্তত ৪৬ হাজার মানুষ চাছ চাষ ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত।’

এ বিভাগের আরো খবর