বরগুনার সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সুলতানা নাদিরা সবুরের বাসা তাক করে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে হঠাৎ বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা। আর তা নিয়ে বেধেছে গোলমাল।
এমপি সুলতানা নাদিরা সবুর অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের দিকে। তার অভিযোগ, গোপন নজরদারির উদ্দেশ্যে এমন বন্দোবস্ত। তবে এমপি রিমনের দাবি, ‘ঝগড়ার উপলক্ষ্য’ খুঁজছেন সুলতানা নাদিরা।
ঘটনাস্থলে শনিবার গিয়ে দেখা যায়, পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজে প্রধান ফটকের উত্তর দিকের বিদ্যুতের খুঁটিতে একটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ওই ক্যামেরার সামনের দিকে সড়কের দক্ষিণে এমপি সুলতানা নাদিরার বাসা।
অন্যদিকে এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন কলেজের বিপরীতে দুলাল কোম্পানির মালিকানাধীন একটি ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। রিমনের ভাড়া বাসা থেকে এমপি সুলতানা নাদিরার বাসভবনের দূরত্ব মাত্র ৩০ ফুট। তার স্বামী প্রয়াত সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু ২০০২ সালে বাড়িটি নির্মাণ করেন।
গোলাম সবুর টুলুর বড় মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি জানান, সম্প্রতি বাসার সামনে সিসি ক্যামেরাটি তাদের নজরে আসে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এটি পৌরসভা বা থানার পুলিশের কেউ স্থাপন করেনি।
এমপি সুলতানা নাদিরার পরিবারের ধারণা, তাদের বাসায় নজরদারির জন্য ক্যামেরাটি এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন বসিয়েছেন। নাদিরার মেয়ে রুমকি বলেন, ‘আমার বাসায় কারা আসা-যাওয়া করে তা নজরদারি করার জন্যই এমপি রিমন ক্যামেরাটি স্থাপন করেছেন। এটি একজন নাগরিকের প্রাইভেসি লঙ্ঘন। আমরা বিষয়টিতে বিব্রত।’
সুলতানা নাদিরা বলেন, ‘আমার বাসায় নজরদারির জন্য কেউ গোপনে ক্যামেরা স্থাপন করেছে, এটা আমার জন্য বিব্রতকর। এটি আমার গোপনীয়তা সুরক্ষার জন্য হুমকি।’
সিসিটিভি ক্যামেরার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পাথরঘাটা কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকনও বলছেন, ওই ক্যামেরা বসানোর সঙ্গে তাদের কোনো যোগ নেই। একই কথা বলছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যামেরাটি পুলিশ স্থাপন করেনি। বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।’
তবে এমপি হাচানুর রহমান রিমন স্বীকার করেছেন, তার উদ্যোগেই বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা। অবশ্য এমপি সুলতানা নাদিরার বাসায় নজরদারির অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি।
শওকত হাচানুর রহমান রিমন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসার সামনে রাস্তার দুই দিকে দুটি সিসি ক্যামেরা বসাইছি। কারো বাসার দিকে আমি ক্যামেরা বসাইনি।
‘আমি নিজের নিরাপত্তার জন্য রাস্তা মনিটর করতে ওই দুটি ক্যামেরা দিয়েছি। আপনি চাইলে আমি আপনাকে মনিটরে দেখাব।’
এমপি সুলতানা নাদিরা সবুরের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা স্রেফ তাদের মনের ভ্রান্তি, আমার সঙ্গে এটা গায়ে পড়ে ঝগড়ার মতো আচরণ ছাড়া আর কিছু না।’