রাজধানীর পল্লবী থেকে তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
রকিবুল্লাহ নামে এক আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার রোববার শুনানি শেষে এসব আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো তিন আসামি হলেন মো. তরিকুউল্লাহ, জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়ন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) সজিব খান চার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাতে ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের শনাক্ত করার পাশপাশি ভিকটিমদের উদ্ধার সহজ হবে।
বাদীপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হযরত আলী, ইব্রাহিম খলিলসহ কয়েকজন আইনজীবী আসামিদের রিমান্ড চান।
তাদের একজন বলেন, ‘আসামিরা টিকটক বানানোর কাজে জড়িত। তারা বিশেষ চক্রের সদস্য। কিশোরীদের তারা ফুসলিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায় ও অপহরণ করে। কাজ শেষে সেখানেই তারা কিশোরীদের ফেলে আসে।
‘টিকটক জিনিয়ার মাধ্যমে চক্রটি এই তিন কলেজশিক্ষার্থীকে ফুসলিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার, সার্টিফিকেটসহ অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। ৭২ ঘণ্টা পার হলেও তারা উদ্ধার হয়নি। তাদের দ্রুত উদ্ধার করা প্রয়োজন। এ জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ দরকার।’
আসামি তরিকুল্লাহ, জিনিয়া ও অয়নের পক্ষে আইনজীবী মির্জা সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সোহেল হাওলাদার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনজনের বয়স ১৮ বছরের কম যুক্তি দেখিয়ে রিমান্ড নাকচ করে বয়স নির্ধারণের আবেদন করেন তারা।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রকিবুল্লাহকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। অন্য তিন আসামির বয়স নির্ধারণের পর রিমান্ড শুনানি হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইব্রাহীম খলিল এসব তথ্য নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর পল্লবী থেকে তিন কলেজছাত্রী ‘নিখোঁজ’ হন। তারা বাসা ছেড়ে বের হওয়ার সময় টাকা, অলংকার ও নিজেদের সার্টিফিকেট নিয়ে যান।
দীর্ঘ সময় ছাত্রীরা বাসায় না ফেরায় পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে এ বিষয়ে পল্লবী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়।
দুই দিনেও তিন কলেজছাত্রীর সন্ধান না পেয়ে শনিবার রাতে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে মামলা হয়।
এজাহারে দাবি করা হয়, কলেজছাত্রীদের পরিবার লোক মারফত জানতে পেরেছে অপহরণের ঘটনা। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে পল্লবী ১০ নম্বর সেকশনের প্যারিস রোডের কাইল্লার মোড় উত্তর পাশের পাকা রাস্তা থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তাদের উঠিয়ে নেয়া হয়।
এ মামলায় এজাহারভুক্ত চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগেই আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।