করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে চলতি বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (পিইসি-ইইসি) পরীক্ষা নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নেয়ার মতো প্রস্তুতি এখনও শুরুই করেনি।
ফলে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার পরিবর্তে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’
এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর গত বছরের মতো চলতি বছরও অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও মাদ্রাসার জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেছিলেন, ‘মনে হয় না জেএসসি নেয়ার সুযোগ পাব। সামনেই এসএসসি-এইচএসসি আছে। তবে আমাদের শ্রেণি সমাপনীটা সব ক্লাসে হবে। সেটা অষ্টম শ্রেণিরও হবে।’
গত বছরের মতো এবারও পিইসি-ইইসি পরীক্ষা না নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা। এর পরিবর্তে নিজ নিজ স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পিইসি ও ইইসি পরীক্ষা হয়ে থাকে বছরের নভেম্বর মাসে। করোনার কারণে গত বছর পিইসি-ইইসি পরীক্ষা হয়নি। নিজ নিজ মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করে স্কুল ও মাদ্রাসাগুলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, এই পরীক্ষার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নাকি নিজ নিজ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হবে, তা বলার এখনও সময় হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চলতি বছরের পিইসি-ইইসি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষা নেয়ার জন্য যেসব প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়, তা এখনও শুরুই করা হয়নি। এর পরিবর্তে নিজ নিজ স্কুল ও মাদ্রাসায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে না হলেও নিজ নিজ বিদ্যালয় একটি পরীক্ষা নিয়ে মূল্যায়ন করবে। কারণ ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য একটি সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীর প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া ওয়ার্কশিটের মাধ্যমে মূল্যায়ন অথবা কিছু নম্বর যোগ করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়। তবে প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হচ্ছে না।
শুধু চলতি বছরের ও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস নেয়া হচ্ছে। আর অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম, নবম শ্রেণিতে দুই দিন এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক দিন ক্লাসে আসতে বলা হয়েছে।