বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে সেই প্রোগ্রামটির অনুমোদন নিতে হয়। তবে এই নিয়মের তোয়াক্কা করছে না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি।
নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষ একটি প্রোগ্রামের অনুমোদন নিয়ে এর আড়ালে মোট ১২টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। নিজস্ব তদন্ত চালিয়ে বিষয়টিকে অবৈধ ও আইনবহির্ভূত বলছে ইউজিসি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গত ২৩ সেপ্টেম্বর নর্থ সাউথসহ আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনহীন প্রোগ্রামের বিষয় উল্লেখ করে গণবিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে।
ইউজিসির তদন্তে এসেছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি প্রোগ্রামের অনুমোদন নিয়েছে, আর সেটি হলো ব্যাচেলর অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ)। তবে এই প্রোগ্রামের অনুমোদন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি আরও ১১টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করেছে। এগুলোর কোনো অনুমোদন নেই ইউজিসির।
ইউজিসির অনুসন্ধান বলছে, বিবিএ ইন জেনারেল, বিবিএ ইন ফিন্যান্স, বিবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, বিবিএ ইন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, বিবিএ ইন মার্কেটিং, বিবিএ ইন ম্যানেজমেন্ট, বিবিএ ইন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, বিবিএ ইন অ্যাকাউন্টিং, বিবিএ ইন ইকোনমিকস, বিবিএ ইন এন্টারপ্রেনিউরশিপ এবং বিবিএ সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামগুলোতে তাদের কোনো অনুমোদন নেই।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রোগ্রামের অনুমোদন নিয়ে একাধিক প্রোগ্রাম পরিচালনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ নীতি ও আইনবহির্ভূত। এটা কোনোভাবেই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রত্যাশিত নয়। এটা করার অর্থ হলো অবৈধ কাজ করা।’
অনুমোদনহীন কোর্সে ভর্তির বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘অনুমোদনহীন কোর্সে ভর্তি করা মানে হলো শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেয়া।
‘এসব সনদ যেকোনো সময় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তখন তারা (নর্থ সাউথ কর্তৃপক্ষ) অনুমোদনহীন কোর্সে ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের চার বছরের শিক্ষাজীবন ফেরত দেবে কীভাবে? নর্থ সাউথের এসব সনদের কোনো বৈধতা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করা মারাত্মক অপরাধ। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেব।’
গণবিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে একজন শিক্ষার্থীর উচিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া। কমিশনের ওয়েবসাইটে নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিস্থিতি হালনাগাদ করা হয়, এতে শিক্ষার্থীদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।