বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মুনিয়া ধর্ষণ-হত্যা মামলা: মডেল পিয়াসা রিমান্ডে

  •    
  • ৩ অক্টোবর, ২০২১ ১৪:৩১

আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে পিয়াসাকে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

রাজধানীর গুলশানে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।

ঢাকার মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসীর আদালত রোববার দুপুরে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এ আদেশ দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন গত ১৩ সেপ্টেম্বর পিয়াসাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। আদালত আসামির উপস্থিতিতে শুনানির দিন ৩ অক্টোবর ঠিক করেন।

ওই দিন পিয়াসাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন গ্রহণ করেন। পরে রিমান্ড শুনানি হয়।

পিয়াসার পক্ষে আইনজীবী সোহরাব হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। ওই সময় আইনজীবী মেসবাহ উদ্দিনসহ কয়েকজন আইনজীবী তার সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পিয়াসাকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়।

আদালতে গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (নারী-শিশু) স্বপন কুমার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।

গত ৬ সেপ্টেম্বর মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ ৮ জনকে আসামি করে ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। আদালত পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন আনভীরের বাবা আহমদ আকবর সোবহান, মা আফরোজা, স্ত্রী সাবরিনা, মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মুনিয়ার বাড়িওয়ালা ইব্রাহিম আহমেদ রিপন, তার স্ত্রী শারমিন এবং আনভীরের ‘মেয়েবন্ধু’ সাইফা রহমান মিম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুনিয়াকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর তাকে কলেজ হোস্টেল থেকে ২০১৯ সালের জুনে ৬৫ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। তিনি মুনিয়াকে সাত থেকে আট মাস ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি অপর আসামিরা জেনে গেলে আনভীরের বাবা, মা পিয়াসার মাধ্যমে মুনিয়াকে তাদের বাসায় ডেকে এনে ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। অন্যথায় তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।

এ অবস্থায় আনভীর বিয়ের আশ্বাসে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুনিয়াকে কুমিল্লায় বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেন। মুনিয়ার সঙ্গে আনভীর মোবাইলে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিয়ের আশ্বাস দিতেন।

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, গত ১ মার্চ আবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মুনিয়াকে কুমিল্লা থেকে গুলশানে মাসিক এক লাখ ৩০ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন আনভীর। বাসায় একা রেখে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিয়ের প্রলোভনে তাকে ধর্ষণ করেন তিনি। এতে মুনিয়া অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এ পর্যায়ে মুনিয়া আনভীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। এতে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও বিরোধ সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি অপর আসামিদের মধ্যে প্রকাশ পেলে তারা পারিবারিক সুনাম রক্ষায় মুনিয়াকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে আনভীর মুনিয়াকে কুমিল্লা চলে যেতে বলেন। না হলে তার (আনভীর) মা তাকে (মুনিয়া) মেরে ফেলবে বলেও জানান।

তখন মুনিয়া লাইভে এসে সবকিছু ফাঁস করে দেবেন বলে আনভীরকে জানান। তখন মুনিয়াকে আনভীর বলেন, ‘এত সময় তুই পাবি না। আমি তোকে দেখে নেব।’

নুসরাত জাহান অভিযোগে বলেন, মুনিয়া ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে আসামিদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ঢাকা ছেড়ে যশোর পালিয়ে যেতে চায়। এ জন্য সে ২৬ এপ্রিল সকালে দুই দফা বাড়িওয়ালা এবং তার স্ত্রীর কাছে গাড়ি চায়। তারা গাড়ি না দিয়ে উল্টো বিষয়টি অপর আসামিদের কাছে ফাঁস করে দেয়। তখনই সব আসামি পরস্পর যোগসাজশে মুনিয়াকে বাসায় আটকে রেখে হত্যার ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করে এবং কিলিং মিশন দিয়ে মুনিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করে।

গত ১ আগস্ট রাতে পিয়াসার বারিধারার বাসায় অভিযান চালিয়ে মদ, ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরের দিন গুলশান থানার মামলায় তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। এরপর গুলশান, ভাটারা ও খিলক্ষেত থানার আলাদা তিন মামলায় তাকে ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কয়েক দফা রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানার মামলায় পিয়াসার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভাটারা ও খিলক্ষেত থানায় করা মাদকের দুই মামলায় পিয়াসাকে জামিন দেয় আদালত। অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকায় মুক্তি মেলেনি তার।

এ বিভাগের আরো খবর