দেশের ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করেন পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান খসরু।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাতে নিয়মিত খেলাপি ঋণই এখন এক লাখ কোটি টাকার বেশি। অবলোপন বা রাইট অফ ও আদালতে মামলার কারণে আটকে থাকা ঋণ যোগ করলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও অনেক বেশি। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে যে করেই হোক এই বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতেই হবে।
‘আর এ জন্য সরকার বা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ দেশের সব ব্যবসায়ী সংগঠনকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’
যুক্তি দেখিয়ে এহসান খসরু বলেন, ‘কেন না ঋণখেলাপিরা কোনো না কোনো ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য। অ্যাপেক্স বডি হিসেবে এফবিসিসিআইয়েরও সদস্য তারা। সে ক্ষেত্রে এফবিসিসিআইয়ের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।’
মহামারি করোনাভাইরাসের ছোবলে বিশ্ব অর্থনীতির মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও গভীর সংকটে পড়ে গত বছরের শুরুর দিকে। সেই ধাক্কা সামলে অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করাতে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার ২৫টির মতো প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার।
এই প্রণোদনা ঋণের পুরোটাই বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। যার বেশির ভাগ ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়ে গেছে। গত বছর প্রণোদনা ছাড়া অন্য ঋণ খুব একটা বিতরণ করেনি ব্যাংকগুলো। তবে এখন মহামারির ধকল কমতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক হয়ে আসছে সবকিছু, ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে অর্থনীতি। আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে, ঋণ বিতরণও বাড়ছে।
২০২২ সালে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হবে; চলবে ট্রেনও। একই সময় রাজধানীর উত্তর থেকে দক্ষিণে ছুটবে মেট্রোরেল। দেশের দক্ষিণ-পূর্বের বন্দরনগরী চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশের সুড়ঙ্গপথও চালু হয়ে যাবে তত দিনে।
এই টানেল কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। ফলে ২০২৩ সালে অবকাঠামো সামর্থ্যে ভিন্ন এক বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। সেই নতুন বাংলাদেশকে বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকগুলোও তাদের বিনিয়োগের নতুন ছক কষছে।
এমন পরিস্থিতিতে ‘কেমন চলছে ব্যাংক খাত’ শিরোনামে নিউজবাংলা ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। সাক্ষাৎকারভিত্তিক এই প্রতিবেদনের চতুর্থ পর্বে দেশের ব্যাংকিং খাতের হালচাল নিয়ে কথা বলেছেন পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান খসরু।
করোনার সময়ে জরুরি সেবার আওতায় ব্যাংক খোলা রাখা হয়েছিল। সেই ব্যাংক খাতের অবস্থা এখন কেমন? কেমন চলছে ব্যবসা? বর্তমানে এ খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ কী দেখছেন?
কোভিড-১৯ একটি বৈশ্বিক অতিমারি, যা বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতির মতো বাংলাদেশেও আঘাত হেনেছে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং এর প্রবৃদ্ধিকে ধীরগতির চক্রে আবদ্ধ করে ফেলেছে। বাংলাদেশের জিডিপির মূল স্তম্ভ ব্যাংক খাত। এ খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি জিডিপিতে বড় অবদান রাখে। ব্যাংক খাত সাধারণ মানুষ নিয়ে কাজ করে।
করোনা মহামারির ধকল সামলে অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারঘোষিত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজের আওতায় প্রণোদনার অর্থ ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে বিতরণ করার চেষ্টা করেছে। প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী যাতে সরকারের ঋণের সুবিধা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে কাজ করেছে ব্যাংকগুলো। অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থের জোগানের ভারসাম্য রক্ষা করতেও ব্যাংক খাত কাজ করেছে।
সমাজের দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংকগুলো সরকারের পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। করোনাকালীন অতিমারির ধকল কাটিয়ে উঠে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণগ্রহীতাদের পক্ষে স্থগিত কিস্তি ফেরত প্রদান যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত কিস্তি পরিশোধের সময় প্রদান করেছে।
সরকারঘোষিত সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলো কাজ করছে। এ ছাড়া প্রান্তিক ঋণগ্রহীতাকে নতুন ধরনের ঋণসুবিধা প্রদান করছে। বিশেষ করে এসএমই খাতের ঋণের ক্ষেত্রে সরকার সুদ ভর্তুকি প্রদান করছে, যা দ্বারা তারা করোনা মহামারিতে সৃষ্ট ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে।
চতুর্থ প্রজন্মের অনেক ব্যাংকে মূলধন ঘাটতি আছে। এ ঘাটতি পূরণে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে। মার্জার ও অ্যাকুইজেশন তার মধ্যে একটি। দুটি বা তিনটি ব্যাংক একত্রিত হয়ে আরও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হতে পারে। দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।
কারণ মার্জার ও অ্যাকুইজেশন (একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ) পৃথিবীব্যাপী ব্যাংককে শক্তিশালী করার একটি অস্ত্র, কিন্তু গ্রাহকরা তো এগুলো বুঝবে না। কারণ এ বিষয়টি নেতিবাচকভাবে প্রচার করলে গ্রাহকদের মনে আতঙ্কের জন্ম নেবে। গ্রাহক বোঝে শক্তিশালী ব্যাংক।
খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সম্প্রতি এফবিসিসিআইয়ের একটি অনুষ্ঠানে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ব্যবসা করতে তারা সব ধরনের সেবা দিতে প্রস্তুত, কিন্তু খেলাপি ঋণ আদায়ে এফবিসিসিআই যেন তাদের সহিযোগিতা করে। এফবিসিসিআই কীভাবে ঋণ আদায়ে সহযোগিতা করতে পারে?
আমি মনে করি, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা হচ্ছে বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ। এই বোঝা ঘাড়ে নিয়ে ব্যাংকিং খাত কখনোই শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারবে না। তাই যে করেই হোক, খেলাপি ঋণ কমাতেই হবে; এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হয়ে আসতেই হবে।
ব্যাংক খাতে নিয়মিত খেলাপি ঋণই এখন এক লাখ কোটি টাকার বেশি। অবলোপন বা রাইট অফ ও আদালতে মামলার কারণে আটকে থাকা ঋণ যোগ করলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও অনেক বেশি। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে যে করেই হোক এই বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতেই হবে।
আর এ জন্য সরকার বা অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ দেশের সব ব্যবসায়ী সংগঠনকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা ঋণখেলাপিরা কোনো না কোনো ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য। অ্যাপেক্স বডি হিসেবে এফবিসিসিআইয়েরও সদস্য তারা। সে ক্ষেত্রে এফবিসিসিআইয়ের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।
এফবিসিসিআইয়ের সদস্য যারা খেলাপি হবেন, তাদের অ্যাসোসিয়েশনে নাও রাখতে পারে। কারণ কোনো ব্যাংকে এলসি খুলতে বা ট্রানশিপমেন্ট করতে অ্যাসোসিয়েশনের সনদ লাগে। সে ক্ষেত্রে এসব অ্যাসোসিয়েশনের যেসব সদস্য খেলাপি, তাদের বিষয়ে এফবিসিসিআই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলাপি ঋণ আদায়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
আমরা ঋণের ৯ শতাংশ সুদ চালু করেছি গ্রাহকদের জন্য। বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সবাই ৯ শতাংশের এ সুবিধা ভোগ করেছে। তাহলে সংগঠনের যারা ব্যাংকের ঋণখেলাপি হচ্ছেন তাদের ঋণ নিয়মিত করার জন্য এফবিসিসিআইসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোরও ব্যাপক চেষ্টা থাকা দরকার। এটা একটি সময়ের দাবি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা তিন মাস গড় মূল্যস্ফীতির কম সুদ আমানতে দেয়া যাবে না, এটা প্রতিপালন করতে কোনো চ্যালেঞ্জ বা নতুন আমানত সংগ্রহে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন?
কিছু কিছু ব্যাংক তাদের অ্যাফিশিয়েন্সির কারণে আমানতে সুদহার ২-৩ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। নন-আর্নিং অ্যাসেটের কারণে আমাদের পরিচালন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। আর্নিং অ্যাসেট থাকলে ব্যয় কমে। সাধারণ গ্রাহকদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত খুবই ভালো। কারণ মূল্যস্ফীতি যেখানে সাড়ে ৫ শতাংশের ওপরে, সেখানে ২ বা ৩ শতাংশ আমানতে সুদ দেয়া ঠিক না। গ্রাহকের কিছুই থাকে না। কিন্তু ঋণের ৯ শতাংশ সুদ দিয়ে আমানতে ৫ শতাংশের ওপরে সুদ দেয়ার বিষয়টি সমন্বয় করতে হবে। ব্যাংকের ৯০ শতাংশ অ্যাসেট গ্রাহকের, মালিকের ১০ শতাংশ। উভয়ে যেন প্রাপ্য সুবিধা পায়, সেটার ভারসাম্য করতে হবে।
সুদহারের বিষয়টি সাময়িক সময়ের জন্য করা হয়েছে। পরে সুদহার ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দেয়া হবে বলে আমার মনে হয়। সাধারণ গ্রাহক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কিংবা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে এবং ব্যাংকগুলো সব সময়ের মতো এখনও আস্থার জায়গা ধরে রেখেছে। তা ছাড়া সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে ঋণসুবিধা না থাকায় গ্রাহক ব্যাংকগুলোতেই আমানত রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।
করোনাকালে প্রণোনার ঋণ ছাড়া নতুন ঋণ বিতরণ ছিল কম। প্রণোদনার ঋণ ছোট উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন না বলেও সমালোচনা আছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ব্যাংক কি একটু বেশি সতর্কভাবে ঋণ দিচ্ছে?
করোনার কারণে ব্যাংকের ঋণ প্রবাহ কমে গেছে। ব্যাংকের গ্রাহক একের পর এক অসুস্থ হয়েছে। ফলে তাদের প্রতিষ্ঠানও দুর্বল হয়ে গেছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প একটা বড় খাত। সরকারি ব্যাংকের মতো বেসরকারি ব্যাংকগুলোর এত বড় ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল নেই। সব জায়গায় ঋণ পৌঁছানোর মতো এত সামর্থ্য সব ব্যাংকের নেই। ঋণ শুধু বিতরণ করলে হবে না, আদায়ের প্রশ্নও আছে। সে কারণে বেসরকারি ব্যাংকগুলো একটু বিমুখ। সার্বিক ঋণ বিতরণও কমে গেছে। ঋণ প্রবৃদ্ধি আগে ১৪ ছিল, সেটা কমে ৭ বা সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে গেছে।
ফলে ব্যাংকে তারল্য বা অতিরিক্ত টাকা বেড়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন বন্ড ও ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা তুলে নিচ্ছে। একদিকে সাধারণ গ্রাহকদের ঋণ প্রদান কমে গেছে। ফলে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে তারল্য ২ লাখ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ বাজার-তারল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ এখন কোনো বড় বিনিয়োগ হচ্ছে না। অন্যদিকে সরকার প্রদত্ত পুনঃ অর্থায়নের তারল্য ব্যাংকিং খাতে প্রবেশ করছে। এমতাবস্থায় কোনো প্রকৃত ও ভালো ব্যবসায়ী নতুন ব্যবসা শুরুর জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী নন।
এ জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বাড়ানোর জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে। প্রতিটি ব্যাংকের আলাদা ধারণা নিয়ে এগোতে হবে। যে ব্যাংকের যে এলাকায় সুবিধা সেভাবে এগোতে পারে। সরকারের পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করে ঋণ বিতরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সিঙ্গেল ব্যাংক কনসেপ্ট নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হতে পারে।
আমরা জেনেছি যে সামনে পদ্মা ব্যাংকে বড় অঙ্কের একটা বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। সে বিষয়ে কিছু বলুন। আর সার্বিকভাবে আপনাদের ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি এখন কেমন? সামনে গ্রাহকদের জন্য কী কী সেবা চালুর পরিকল্পনা আছে?
পদ্মা ব্যাংক ২০১৯ সালে যে অবস্থান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, বিগত দুই বছরে তা অপেক্ষা সব আর্থিক সূচকে উন্নতি লাভ করেছে। বর্তমানে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে আর্থিক ভিত্তি উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি আমেরিকাতে আমরা একটি মিটিং করেছি। আমার মনে হয়েছে, নর্থ আমেরিকা, মিডলইস্ট বা চায়না বাংলাদেশে একটা পজিশন নেয়ার সুযোগ খুঁজছে। তারা এ দেশের এসডিজির সূচকগুলো দেখেছে। তারা এখন বিশ্বাস করে, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে উন্নীত হবে। এ জন্য তারা ব্যাংকিং খাতে একটি পজিশন নিতে পারে।
আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ডেলমর্গান অ্যান্ড কোম্পানির ৭০০ মিলিয়ন ডলারের একটি ফরমাল অ্যাগ্রিমেন্ট হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এতে পদ্মা ব্যাংকের মূলধন ভিত্তি আরও মজবুত হবে। প্রতিটি সূচক উন্নতি হবে। পদ্মা ব্যাংকের আগের ম্যানেজমেন্টের কারণে যে সমস্যা হয়েছিল, সেটা কাটিয়ে উঠবে।
২০১৮ সালে পদ্মা ব্যাংকের ৮০ শতাংশ ঋণ ছিল অনাদায়ী। তিন বছরে সেটা কমে ৬০ শতাংশে নেমেছে। এ বছর ৫০ শতাংশে নামবে। এই খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে যায়।
আমাদের ব্যাংক কমপ্লিট ডিজিটাল হবে। এখন গ্রাহকরা ঘরে বসে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে হিসাব খুলতে পারছেন। ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঘরে থেকে তাদের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছেন। এ ছাড়া মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় লেনদেন করতে পারছেন। গ্রাহকদের ঘরে বসে হিসাব খোলার সুবিধা প্রদান করেছি।
এমনকি ঘরে বসেও ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট করার সুবিধা বাস্তবায়ন করেছি আই ব্যাংকিং ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। নারীদের জন্য বিভিন্ন আর্থিক স্কিম রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে এবং সরকারঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পদ্মা ব্যাংক তার শাখাসমূহ থেকে গ্রাহকসেবা অব্যাহত রেখেছে।