বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঁদপুর আ.লীগের তৃণমূলের সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের তুলাধোনা

  •    
  • ২ অক্টোবর, ২০২১ ২১:০৮

চাঁদপুর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের প্রতিনিধি ও বর্ধিত সভায় জেলা থেকে উঠে আসা কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বললেন তৃণমূলের নেতারা। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নেতারা নিজেদের স্বার্থে কাজ করেন। দলের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের বদলে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদেরকে পাশে টেনেছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে চাঁদপুরের নেতাদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সমন্বয়হীনতা ও দূরত্বের বিষয়টি উঠে এসেছে দলের প্রতিনিধি সভায়।

কেন্দ্রীয় আরও নেতাকে সামনে পেয়ে চাঁদপুরের নেতাদেরকে তুলাধোনা করলেন তৃণমূলের নেতারা।

শনিবার চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভা ও বর্ধিত সভায় এই বিষয়গুলো উঠে আসে। জেলা স্টেডিয়ামে ওই সভায় তৃণমূল নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নিজেদের সুবিধামতো না হলে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতা করতেও পিছপা হন না।

চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য। একই এলাকায় বাড়ি দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীরও।

চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

চাঁদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর। তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। তার নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।

বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাসিরউদ্দিন আহম্মদ। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল।

প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ মানুষ মাহবুবউল আলম হানিফ। বক্তব্য রাখেন দীপু মনি, মহিউদ্দিন খান আলমগীর, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলামও।

প্রধান বক্তা ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, দুই সংসদ সদস্য সফিকুর রহমান ও নুরুল আমিন রুহুল, কেন্দ্রীয় নেতা সুজিত রায় নন্দী, সেলিম মাহমুদ, নাজিবুল্লাহ হিরু, মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা রেদোয়ান খান বোরহানও বক্তব্য রাখেন।

বর্ধিত সভায় মতলবের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি মামলার আসামি। দলীয় নেতা-কর্মীরাই বিপদে আছে। সংসদ সদস্য বিএনপি-জামায়াত, রাজাকার দিয়ে দল চালাচ্ছেন।’

হাইমচর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা নূরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দলীর লোক যেন নমিনেশন পায়। অর্থ দিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে যেন কেউ নমিনেশন না পায়। আমাদের কিছু কেন্দ্রীয় নেতা আছে যারা নিজেদের সুবিধামতো না হলে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেন।’

কচুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও কচুয়া পৌর মেয়র নাজমুল আলম স্বপন বলেন, ‘তিনটা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তৃণমূলের খবর কেউ নেয় না। তৃণমূলের খবর না নিলে আগামী নির্বাচনে কেউ মাঠে নামতে চাইবে না। তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ হলে নেত্রী আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন।’

কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে হাজীগঞ্জ উপজেলার ১২নং ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘তৃণমূলের দিকে খেয়াল করুন, তাদের দিকে নজর দিন। আমি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছি। যে আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তাকে আমার ইউনিয়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

কচুয়া ৩ নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতারা এক হয়ে যান। আমরা একটা আদর্শ চাঁদপুর আওয়ামী লীগ দেব।'

কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও কচুয়া পৌর যুবলীগের সভাপতি মাহাবুব আলম বলেন, ‘সব জায়গায় জামায়াত-শিবিরের লোকজন। সংসদ সদস্যকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একাত্ম হতে হবে।’

চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘২৮ বছরে দুটো সম্মেলন পেলে রাজনীতি কীভাবে করব? পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রয়োজন। নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন তার জন্য কাজ করব। আমাদের একটা চমৎকার গঠনতন্ত্র আছে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ৩ বছর পরপর সম্মেলন হয়। কিন্তু জেলা পর্যায়ে ঠিকমত সম্মেলন হয় না। হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে লেগে যায় দুই বছর।’

কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আমাদের তিনরত্ন আছে, তারা কখনও এক সঙ্গে বসে না। গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়। কিন্তু গোয়েন্দারা আওয়ামী লীগকে পাহারা দেয় না। পাহারা দেয় তৃণমূলের নেতারা।’

ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২০০১ সালে সাংবাদিক শফিকুর রহমান মনোনয়ন পেলেন। ভোটের পর আর আসলেন না। ২০১৮ সালে তিনি আবার মনোনয়ন পেলেন। আবার এলেন।

‘মদখোর, গাঁজাখোর ও বিএনপিরা দল চালায়। ফরিদগঞ্জের অবস্থায় এত বেশি সমস্যায় আছি, তা বলে বোঝানো যাবে না।’

চাঁদপুর সদর ইউনিয়নের এক নেতা কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘সবাই সবার কথা বলছে, এটা ভালো লাগছে। আমাদের সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। লবণ ও চিনি দেখতে এক রকম, কিন্তু স্বাদ আলাদা। নেতৃবৃন্দকে বলব, এই দুইটির স্বাদ দেখে নেতা বানাতে।’

এ বিভাগের আরো খবর