বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনিবন্ধিত মোবাইল বন্ধ শুরু, শনাক্ত ৩১ লাখ

  •    
  • ১ অক্টোবর, ২০২১ ২২:১২

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, ‘আমরা ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে বৈধ ও অবৈধ মোবাইল ফোন শনাক্তের কাজ করেছি। এখন (১ অক্টোবর) থেকে চূড়ান্তভাবে অনিবন্ধিত মোবাইল বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আজ থেকে আর কোন আন-অফিসিয়াল বা অবৈধ হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে না। গত তিন মাসে অবৈধ সেট শনাক্ত হয়েছে ৩১ লাখের মতো।’

তিন মাস পর্যবেক্ষণের পর শুক্রবার থেকে দেশের অবৈধ বা অনিবন্ধিত মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আজ থেকে বৈধ সেটের বাইরে কোন সেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে না। গত তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৩১ লাখ অবৈধ সেট শনাক্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিটিআরসি।

এর আগে অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ করার ব্যাপারে একাধিকবার বিটিআরসি সময়সীমা নির্ধারণ করলেও সেটি কার্যকর করতে পারেনি। সবশেষ গত জুলাই থেকে সেটগুলো বন্ধের ঘোষণা দিয়েও তা থেকে সরে এসেছিল। তবে ১ অক্টোবর থেকে তা কার্যকরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।

বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে যেসব মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি বা প্রস্তুত করা হয়নি, সেগুলোই হচ্ছে অবৈধ। দেশের বাইরে থেকে অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসা ফোনও চালু হবে না। এতে করে বৈধ পথে দেশে মোবাইল ফোন আমদানি বাড়বে, সরকারের রাজস্বও বাড়বে। নতুন উদ্যোগ পুরোপুরি কার্যকর হলে দেশে কোনো অবৈধ মোবাইল ফোন থাকবে না।

বিটিআরসি বলছে, ব্যবহারকারীর হাতের মোবাইল ফোনসেটটি বৈধ না অবৈধ বা আন-অফিসিয়াল তা জানার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) নামের একটি সিস্টেম গত ১ জুলাই থেকে চালু করে বিটিআরসি।

এই সিস্টেমটি মোবাইল ফোন অপারেটর ও আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ফোন আইডেন্টিটি নম্বর) ডাটাবেসের সঙ্গে সংযুক্ত। এতে আগে থেকে মোবাইল অপারেটরের নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা, বৈধ পথে আমদানি এবং দেশে তৈরি মোবাইল ফোনের তথ্য সংরক্ষিত আছে। ফলে আগে থেকেই চালু থাকা মোবাইল নম্বর ও হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়েছে।

আর ৩০ জুনের পরে যেসব মোবাইল ফোন নিয়ম মেনে দেশে ঢুকেনি, সেগুলো সচল হবে প্রক্রিয়া মেনে। গত তিন মাসে এ ধরনের মোবাইল সেট শনাক্তের কাজ করা হয়েছে।

বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, ‘আমরা ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে বৈধ ও অবৈধ মোবাইল ফোন সেট শনাক্তের কাজ করেছি। এখন (১ অক্টোবর) থেকে চূড়ান্তভাবে অনিবন্ধিত মোবাইল সেট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।

‘আজ থেকে আর কোন আন-অফিসিয়াল বা অবৈধ সেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে না। আজতো প্রথম দিন তাই কত সেট বন্ধ হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না, তার জন্য একটু সময় লাগবে। গত তিন মাসে অবৈধ সেট শনাক্ত হয়েছে ৩১ লাখের মতো। আর এ সময় নতুন বৈধ সেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে ৭৬ লাখ। মোট ১ কোটি ৮ লাখের মতো মোবাইল সেট গত তিন মাসে নতুন হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার ক্ষেত্রে বদ্ধপরিকর বিটিআরসি। সে জন্য নতুন মোবাইল সেট কিনতে হলে গ্রাহককে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে সেটি বৈধ কী না। এখন থেকে নতুন কোন সেট চালু করতে হলে তা অথোরাইজড হতে হবে। এর জন্য দেশে মোবাইল কেনার রসিদ দেখাতে হবে, না হয় বিদেশ থেকে আসার সময় ইমিগ্রেশন বা পাসপোর্টে যে সিল ছিল মোবাইল সেট আনার, সেটা দেখাতে হবে। তা না হয় বিদেশে কোথা থেকে কেনা হয়েছে তার ক্যাশ মেমোর ফটোকপি বা ছবি জমা দিতে হবে।

বিটিআরসি বলছে, মূলত দুটি দিক বিবেচনায় নিয়ে মোবাইল সেট নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর একটি আর্থিক, অন্যটি নিরাপত্তাজনিত। যদি অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট আনা কমে যায়, তবে দেশে বৈধভাবে অ্যাসেম্বল বা তৈরি বাড়বে। আবার মোবাইল সেটগুলো নিবন্ধিত থাকলে আমদানিকারকরা সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিতে পারবে না। সরকারের আয় বাড়বে।

আবার কারো মোবাইল ফোন ছিনতাই বা চুরি করে অন্য কেউ সেটি বিক্রি বা ব্যবহার করতে পারবে না। চুরি যাওয়া সেটগুলো সহজে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। মোবাইল সিম, আইএমইআই এবং জাতীয় পরিচয়পত্র একসঙ্গে ট্র্যাকিং করা হবে। এতে করে একজনের নামে নিবন্ধিত মোবাইল অন্যজনের মোবাইল সেট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কোনো অপরাধ সংঘঠিত হলে সেটির বিরুদ্ধে দ্রুত এবং সহজে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

গ্রাহকদের নতুন সেট কেনার আগে সতর্কতার পরামর্শ দিয়ে বিটিআরসি বলছে, মোবাইল কেনার পূর্বে অবশ্যই হ্যান্ডসেটটির বৈধতা মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে ১৬০০২ নম্বরে পাঠিয়ে দেয়ার মাধ্যমে যাচাই করে নিতে হবে।

আজ থেকে নেটওয়ার্কে নতুনভাবে সংযুক্ত অবৈধ হ্যান্ডসেট ব্যবহারযোগ্য হবে না। চুরি অথবা হারিয়ে যাওয়া হ্যান্ডসেটগুলোর ক্ষেত্রে এনইআইআর সিস্টেমের মাধ্যমে হারানো বা চুরির রিপোর্ট করার পর ব্লকলিস্ট বা ব্ল্যাক লিস্টের সুবিধা দেয়া হবে। এ সুবিধাটি কিছু দিনের মধ্যেই চালু করা হবে।

দেশের জনসাধারণ সিটিজেন পোর্টালের এর মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে এনইআইআর সিস্টেমের সেবা নিতে পারবে। যে সব মোবাইল গ্রাহকের ইন্টারনেট সংযোগ নেই তারা সংশ্লিষ্ট অপারেটরের নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থেকে এনইআইআর সেবা নিতে পারবে।

মাল্টি সিমের ক্ষেত্রে আইএমইআই নম্বর অনুযায়ী প্রতিটি স্লটে ব্যবহৃত সিমের বিপরীতে স্লটের ব্যবহার অনুযায়ী আলাদাভাবে রেজিস্ট্রেশন করা হবে। বর্তমানে, একসাথে সর্বোচ্চ একটি আইএমইআই নম্বরের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই একাধিক আইএমইআই নম্বর সম্বলিত হ্যান্ডসেটের প্রতিটি আইএমইআই নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত লিংকের মাধ্যমে একই ডকুমেন্ট সেট দিয়ে আলাদা আবেদন করতে হবে। একইসঙ্গে একাধিক আইএমইআই নিবন্ধন করার সুবিধাও কিছু দিনের মধ্যেই চালু হবে।

বিক্রেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বিটিআরসি বলেছে, কোন বিক্রেতা অবৈধ কোন হ্যান্ডসেট বিক্রি করলে ক্রেতার দাবি অনুযায়ী হ্যান্ডসেটের মূল্য ফেরত দিতে হবে। একই সঙ্গে অবৈধ হ্যান্ডসেট উৎপাদন, আমদানি, ক্রয়, বিক্রি করলে টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর