ফল উৎপাদনে প্রযুক্তির ব্যবহার, দেশীয় ফলের প্রসার এবং সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন নাটোরের কৃষি উদ্যোক্তা সেলিম রেজা। নাটোরের আহমেদপুর ও ডালসড়কে ‘দৃষ্টান্ত অ্যাগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নার্সারি’ নামে প্রায় দেড় শ বিঘার বিভিন্ন ফলের বাগান রয়েছে তার।
কৃষিতে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাজ থেকে ১১টিসহ তার ঝুলিতে রয়েছে কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারতসহ স্থানীয় পর্যায়ের ৭৪টি পুরস্কার।
ফলন না হওয়ায় সেই কৃষি উদ্যোক্তাই এবার ক্ষোভে নিজের বাগানের ১০৭টি ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেলগাছ কেটে ফেলেছেন। বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার আহমেদপুর এলাকায় থাকা বাগানটির সব গাছ কেটে ফেলেন তিনি।
সেলিম রেজার অভিযোগ, স্থানীয় হর্টিকালচারের কর্মকর্তাদের পরামর্শে ৬ বছর আগে ঢাকার খামারবাড়ি ও নাটোর হর্টিকালচার সেন্টার থেকে তিনি ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেলের ওই চারাগুলো কেনেন। পরে চারাগুলো তিনি নাটোরের আহমেদপুর এলাকায় তার নিজস্ব দুই বিঘা জমিতে রোপণ করেন।
তিনি বলেন, ‘এক-একটি চারার মূল্য ছিল ৫০০ টাকা। কেনার সময় বলা হয়েছিল, দুই বছরের মাথায় ফল ধরবে। ছয় বছরে নারিকেল তো ধরেইনি, উপরন্তু গোড়ায় পচন ধরেছে।’
সেলিম রেজা জানান, ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেলের অধিক ফলন হবে- এমন আশ্বাস দিয়ে নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তারা প্রচার চালান। তাদের কথায় বিশ্বাস করে নাটোরের প্রথম কৃষক হিসেবে তিনি সেই নারিকেলগাছ রোপণ করেন।
ছয় বছরে ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করে তিনি জানান, গাছ বড় হয়েছে, কিন্তু নারিকেল ধরেনি। তাই গাছগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে কোনো উদ্যোক্তা যেন প্রতারিত না হন, সে জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে উল্লেখ করে সেলিম রেজা বলেন, কোন গাছ এ দেশের আবহাওয়া উপযোগী, তা জেনে গাছ লাগাতে হবে।
তিন বছর ধরে এই নারিকেলের চারা বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মাহমুদুল ফারুক বলেন, সঠিক পরিচর্যা না করায় ভিয়েতনামি খাটো জাতের নারিকেলগাছে ফল আসেনি।