রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনা রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তা দিতে সরকারের ব্যর্থতার আরও একটি কুনজির বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ এর চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাকে কক্সবাজারের উখিয়া লাম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তার হত্যার ঘটনা রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তা দিতে সরকারের ব্যর্থতার আরও একটি কুনজির।
বৃহস্পতিবার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ যিনি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন, তাকে গুলি করে বর্বরোচিত কায়দায় হত্যার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। আমি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রোহিঙ্গা শিবিরে তাকে নির্মমভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে বিনষ্ট হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ এই সরকার দেশে তাদের নিরাপত্তা দিতেও সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে যে জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই, আইনশৃঙ্খলার কোনো বালাই নেই, তার নিকৃষ্ট প্রমাণ হলো উখিয়ায় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাকে গুলি করে হত্যা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের পক্ষে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ যদি সংরক্ষিত এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হন, তাহলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ ও মানুষ কতটা নিরাপত্তাহীন, তা সহজেই অনুমেয়। এসব অপরাধ সংগঠিত হওয়ার একমাত্র কারণ এই সরকারের শাসনামলে অপরাধ করেও বিচার হয় না। বিচার হলেও সরকারি আনুকূল্যে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়। একারণে অপরাধীরা দ্বিগুণ উৎসাহে অপরাধ করতে উৎসাহী হয়।’
তিনি বলেন, ‘নিশিরাতের ভোট ডাকাতির সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, অদক্ষতায় সর্বক্ষেত্রে চরম নৈরাজ্য এবং নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে জনগণ, বিদেশি নাগরিক বা শরণার্থী কারও জীবনেরই কোনো নিরাপত্তা নেই। নেই স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি।
‘আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে মানুষ দিশেহারা। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের মান-মর্যাদা যেমন ভূলুন্ঠিত হবে, তেমনি জানমালেরও কোনো নিরাপত্তা থাকবে না। জনগণ এই অবস্থার পরিবর্তন চায়।’
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাকে গুলি করে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।