তিন সপ্তাহ পর পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনায় আগ্রহ আবার ফিরেছে। এটি গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধন অবসানের আভাস কি না, তা নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে পতনের পর টানা চার দিন সূচক বাড়ল। এর মধ্যে তিন দিন সূচক বাড়ার পরেও বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এ কারণে ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ছিল না সেভাবে।
তবে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের লেনদেন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফেরার আভাস দিয়েছে।
টানা চার দিন সূচক বাড়ার পাশাপাশি যে ঘটনাটি হতাশা কাটানোর ইঙ্গিত দিয়েছে, সেটি হলো লেনদেনের পরিমাণ।
টানা চার কর্মদিবস বাড়ল লেনদেনও। সকাল থেকেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনায় আগ্রহ দেখাতে থাকার পর বেলা দুইটার আগেই লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তা আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
১২ সেপ্টেম্বর দর সংশোধন শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ পরিমাণে লেনদেন হয়।
১৪ কর্মদিবস আগে ঢাকা এক্সচেঞ্জে লেনদেন ছিল ২ হাজার ৭০৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এরপর থেকে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমতে থাকার পর লেনদেন কমে যেতে থাকে। এর মধ্যে চার দিন লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে আসে। গত আট কর্মদিবসের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত ২ আগস্ট লেনদেন দীর্ঘদিন পর দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে ওঠার পর ২৫ কর্মদিবসের মধ্যে এক দিন কেবল লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার কোটি টাকার কম।
দিন শেষে সূচক বেড়েছে ২৬ পয়েন্ট। লেনদেন ১৪ দিন পর আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর দর বৃদ্ধি ও পতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি দেখা গেছে।
দিন শেষে বেড়েছে ১৬৫টি কোম্পানির শেয়ার দর, কমেছে ১৭১টির।
বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র
আগের কর্মদিবসে সূচক ৫ পয়েন্ট বাড়লেও ১১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমে ২২৩টির দর।
আগের দিনও ১৬৪টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১৭২টির দরপতনেও সূচক বাড়ে ৪৫ পয়েন্ট।
তারও আগের দিন ১৪১টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ২০১টির দর। সেদিন সূচক বেড়েছিল ১৪ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মূলত সূচকের উত্থান-পতন দেখা যাচ্ছে। তার আগে সূচকের একটি ধারাবাহিকতা ছিল। লেনদেন ও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ছিল। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারকে নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের প্রভাব ছিল। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্কও ছিল। তবে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন অনেক বেড়েছিল, সেটি সংশোধন হওয়া প্রয়োজনও ছিল।
‘সে অনুযায়ী বাজারে সূচক ও লেনদেন কমেছে। ফলে এখানে শেয়ার বিক্রির চাপ বা বড় ধরনের সংশোধনের পর লেনদন বেড়েছে, তা নয়। বরং এ অবস্থা থেকেও আরও ভালো অবস্থায় যাওয়ার সুযোগ আছে।’
বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতনেও সূচকের উত্থান যে কারণে
পুঁজিবাজারে মূল্যসূচক ও শেয়ার দরের উত্থান-পতন একটি স্বাভাবিক ঘটনা। যখন বাজার উত্থানে থাকে, তখনও দেখা যায়, কিছু কোম্পানির বা বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দরই ধীরে ধীরে কমতে থাকে। পরে তা আবার বাড়ে। এই কমতে থাকাটাই দর সংশোধন নামে পরিচিত।
সাধারণত দর সংশোধনে সূচক কমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। তবে গত মে মাসের শেষে টানা এক মাস এবং চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনে এবার সূচকের পতন হয়নি।
৩০ মে থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত সময়ে সূচক ওঠানামা করে কখনও ছয় হাজারের বেশি, কখনও ছয় হাজারের সামান্য নিচে নেমেছে।
এবার ৭ হাজর ২৫৮ পয়েন্ট ওঠার পর দর সংশোধনে প্রায় তিন সপ্তাহে সূচক ওঠানামা করে বরং বেড়েছে। কিন্তু কমেছে বেশির ভাগ শেয়ারের দর।
১৫ কর্মদিবসে সূচক বেড়েছে ৭০ পয়েন্টের বেশি, কিন্তু শতাধিক কোম্পানি দর হারিয়েছে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ।
এ ঘটনাটি ঘটেছে বড় মূলধনি কিছু মৌলভিত্তির শেয়ার দরে উল্লম্ফনের কারণে। অন্যদিকে যেগুলো দর হারিয়েছে, তার মধ্যে সিংগভাগের পরিশোধিত মূলধন কম হওয়ায় শেয়ার সংখ্যা খুবই কম। ফলে সেগুলোর দর কমলেও সূচকে প্রভাব পড়ে কম।
বেশি কমেছে লোকসানি জেড ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার দর। এগুলোর দাম যতই হোক না কেন, সূচকে তার ন্যূনতম প্রভাব পড়ে না।
এ কারণে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওর স্বাস্থ্য কমতে থাকলেও সূচক বৃদ্ধিতে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময়ে সূচক বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, একমি ল্যাবরেটরিজ, গ্রামীণফোন, লাফার্জ হোলসিম, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, আইসিবি, পাওয়ার গ্রিডের মতো বড় মূলধনি কোম্পানিগুলো।
বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক বৃদ্ধি ও কমায় সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা ১০টি করে কোম্পানি।
ব্যাংক খাত প্রায় নিত্যদিন দর হারালেও শতকরা হারে তা ছিল খুবই কম। কোনো দিন ১০ বা ২০ পয়সা করে দর হারিয়ে এক দিনে আবার ৩০ বা ৪০ পয়সা করে বেড়েছে বেশ কয়েকটির দর। ফলে বড় মূলধনি এই খাতের কারণেও সূচকের তেমন পতন হয়নি।
আবার ব্যাংক খাতের কারণে সূচকের যতটাই পতন হয়েছে, তা পুষিয়ে গেছে আর্থিক খাতের শেয়ার দর বাড়ায়। বস্ত্র খাতে যেসব কোম্পানি দর হারিয়েছে তার বেশির ভাগই জেড ক্যাটাগরির লোকসানি কোম্পানি। ফলে সেগুলো তেমন কোনো ভূমিকা ছিল না।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর কমলেও সূচকে তার প্রভাব কখনও সেভাবে থাকে না।
ওষুধ রসায়নে লেনদেন চারশ কোটি টাকা
এই খাতটির শেয়ারে সাম্প্রতিক সময় ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। আগ্রহের সর্বোচ্চ অবস্থান দেখা গেল সপ্তাহের শেষ দিন।
এই একটি খাতের ৩০টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে মোট ৪০০ কোটি ৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৩১০ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০টির দর বেড়েছে, কমেছে নয়টির, একটির দর ছিল অপরিবর্তিত। আর একটির লেনদেন দীর্ঘদিন ধরেই স্থগিত।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬.১০ শতাংশ বেড়েছে একমি ল্যাবরেটরিজের দর। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সিলভা ফার্মার দর বেড়েছে ৬.০৪ শতাংশ।
এছাড়া ফার্মা এইডের দর ৫.৪৪ শতাংশ, ইন্দোফার্মার দর ৩.৯৩ শতাংশ, এমবি ফার্মার দর বেড়েছে ৩.৯১ শতাংশ।
রাজস্ব হারাল বেক্সিমকো, নতুন ‘রাজা’ লাফার্জ
টানা দুই দিন দুইশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টে। আগের দিন ২০৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সেটি কিছুটা কমে হয়েছে ২০০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
গত বছরের জুলাই থেকে নিয়মিতভাবে প্রায় প্রতিদিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেড নেমে গেছে তৃতীয় অবস্থানে। এই কোম্পানিটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মায় লেনদেন হয়েছে ১০৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার মোট ছয়টি খাতে দুইশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটিতে হয়েছে আড়াইশ কোটির বেশি
লাফার্জ একা নয়, ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে সিমেন্ট খাতে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে নির্মাণ খাত আবার চাঙা হয়ে উঠার কারণে বিনিয়োগকারীরা এই খাতের কোম্পানি নিয়েও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
এই খাতের সাতটি কোম্পানিতেই লেনদেন হয়েছে ২৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
এই খাতের সবকটি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬.৯৮ শতাংশ বেড়েছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের দর। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লাফার্জের দর বেড়েছে ৪.৬৪ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা এমআই সিমেন্টের দর ৩.৫২ শতাংশ এবং চতুর্থ অবস্থানে থাকা হাইডেলবার্গ সিমেন্টের দর বেগেছে ১.৬১ শতাংশ।
বিদ্যুৎ-জ্বালানিতেও বিনিয়োগ বৃদ্ধি
এই খাতটি দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। লেনদেন হয়েছে ২৮৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১৭৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে পাওয়ারগ্রিডে। এই কোম্পানিটির ৮৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
সব মিলিয়ে ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯টির শেয়ারের, কমেছে তিনটির আর একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।
সবচেয়ে বেশি কমেছে টানা তিন দিন দরপতন হওয়া সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের দর। ৮.৬৭ শতাংশ বেড়ে দিনের সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির শীর্ষ তালিকায় ছিল এটি।
এ ছাড়া নতুন তালিকাভুক্ত বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের দর বেড়েছে ৬.৮৬ শতাংশ। পাওয়ার গ্রিডের দাম ৬.০৫ এবং মবিল যমুনার দর বেড়েছে ৪.৩৯ শতাংশ।
কমেছে কেবল জিবিবি পাওয়ার, কেপিসিএল ও পদ্মা অয়েলের দর।
দরপতনের পর বস্ত্র নামল তৃতীয় অবস্থানে
আগের দিন লেনদেনের শীর্ষে থাকা বস্ত্র খাত নেমে এসেছে লেনদেনের তৃতীয় অবস্থানে। এই খাতে হাতবদল হয় মোট ২৮৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৩১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর হারিয়েছেন ৩১টি, বেড়েছে ১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১২টির দর।
যেগুলোর দর বেড়েছে, শতকরা হিসেবে বেড়েছে খুবই কম। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে যে নিউলাইন ক্লথিং তার দর বেড়েছে কেবল ২.৩২ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্টাইলক্রাফটের দর বেড়েছে ২.০৪ শতাংশ।
২০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে আরও দুইটি খাতে।
এর মধ্যে ২৮৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে আর্থিক খাতে। খাতওয়ারি হিসেবে চতুর্থ অবস্থানে ছিল এটি। আগের দিন লেনদেন ছিল ২৫৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি শেয়ারদরও বেড়েছে।
২৩টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ১৪টির দর। চারটির কম কমেছে, অপরিবর্তিত ছিল তিনটির দর আর দুটির লেনদেন ছিল স্থগিত।
তবে শতকরা হিসেবে শেয়ারের দর বৃদ্ধির হার ছিল খুবই কম। সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়া লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের দর বেড়েছে ৩.৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ফিনিক্স ফাইন্যান্সের দর বেড়েছে ১.৮১ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইসলামিক ফাইন্যান্সের দর বেড়েছে ১.৪৯ শতাংশ।
প্রকৌশল খাতেও লেনদেন আরও খানিকটা বেড়ে হয়েছে ২৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের দিন যা ছিল ২১৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
টানা দরপতন শেষে বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের দরও। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে ২৩টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল একটির দর।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬.০৮ শতাংশ বেড়েছে বিডিল্যাপসের দর।
এছাড়া কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৪.৮১ শতাংশ, ওয়াইম্যাক্সের দর ৪.৬৮ শতাংশ এবং ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের দর ৪.০৬ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যান্য খাতে লেনদেন
অন্যান্য প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংক, বিমা, মিউচ্যুয়াল ফান্ড আবার হতাশ করেছে।
ব্যাংক খাতের ৩২টি কোম্পানিতে লেনদেন সামান্য বাড়লেও দরপতন হয়েছে বেশিরভাগ শেয়ারের।
ব্যাংক, বিমা ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের বিনিয়োগকারীরা হতাশা থেকে বেরই হতে পারছেন না
ব্যাংক খাতে দর বেড়েছে কেবল ৭টি কোম্পানির। বেশিরভাগেরই ১০ পয়সা করে। বিপরীতে কমেছে ১৫টির দর আর দর ধরে রেখেছে বাকি ১০টি।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ১০৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
বিমা খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ৩৭টিরই। বেড়েছে কেবল ১২টির দর আর দাম ধরে রাখতে পেরেছে দুটি।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ১৫২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৬৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মোট ১৪৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সাতটি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে বাকি ৭টির দরও।
আগের দিন এই খাতে লেনদেন হয়েছিল ১৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে লেনদেন ও শেয়ারদর বেড়েছে। এই খাতের ১১টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে মোটি ৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বেড়েছে ৯টির দর, কমেছে দুটির।
আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছির ৫৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির, কমেছে ৭টির, একটির লেনদেন ছিল অপরিবর্তিত।
আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছিল ৪৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
চাঙা পুঁজিবাজারে হতাশার মিউচ্যুয়াল ফান্ডে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও দর হারিয়েছে বেশিরভাগ ফান্ড। ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে কেবল ৫টির, কমেছে ১৬টির। দর ধরে রাখতে পেরেছে বাকি ১৫টি।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ২২ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩২৯ দশমিক ০৩ পয়েন্ট।
শরিয়াভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৮ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৯২ দশমিক ০৯ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট।
দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫০২ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২ হাজার ২৬৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।