দুই শিশুকে নিয়ে বাংলাদেশি বাবার পক্ষের আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর ফলে মামলায় তিনি দুই শিশুর বাবার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে থাকছেন না।
প্রখ্যাত এই আইনজীবী বলেন, ‘আমি না করে দিয়েছি।’
দুই শিশুকে নিয়ে বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের আইনি লড়াই চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। বৃহস্পতিবার এ মামলাটির শুনানি ও আদেশের জন্য রয়েছে।
তবে আদালতের নির্দেশে বুধবার বিকেলে বাবা ও মাকে নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে সমঝোতার জন্য বসার কথা ছিল। তবে এরই মধ্যে আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ এ মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করায় বাবা ও মাকে নিয়ে বৈঠক হয়নি বলে জানিয়েছেন মায়ের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিনিয়র আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ স্যার মামলা থেকে ইউথড্রো করেছেন। এ কারণে আর বৈঠক হয়নি।’
শিশু দুটির বাবা ইমরান শরীফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি (রোকন উদ্দিন মাহমুদ) না থাকলে এখন আমার পক্ষে ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল শুনানি করবেন। এটুকুই বলতে পারি।’
মঙ্গলবার এ মামলার শুনানি নিয়ে এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাবা-মাকে সমঝোতার জন্য আরেক দফা সময় দেন। এজন্য দুই পক্ষের আইনজীবীকে উদ্যোগ নিতে বলেন। এরপর আদালত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিষয়টি মূলতবি করেন।
রোকন উদ্দিন মাহমুদ সেদিন বলেন, ‘আদালতে শিশু দুটির মায়ের পক্ষে ছিলেন ফিদা এম কামাল, ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও মুস্তাফিজুর রহমান। অপরদিকে মায়ে পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।’
এর আগে এক আদেশে হাইকোর্ট শিশু দুটিকে নিয়ে গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে একদিন মা, আরেক দিন বাবার সঙ্গে, এভাবে পর্যায়ক্রমে থাকার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে বাবা-মায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে দুই পক্ষের আইনজীবীদের উদ্যোগ নিতে বলেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্বামী ইমরান শরীফ কাছ থেকে ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই মেয়ে সন্তানকে ফিরে পেতে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি নারী এরিকো। ওই দিন রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট দুই শিশুকে হাজির করতে নির্দেশ দেয়।
আদালতের নির্দেশের পর গত ২২ আগস্ট দুই শিশুকে বাবা ইমরানের বারিধারার বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
পরে আদালতের নির্দেশেই তাদের উইমেন সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়। পরে দুই পক্ষের আইনজীবীই শিশু দুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে ভিন্ন কোনো জায়গায় নিয়ে যেতে আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গুলশানের একটি বাসায় বাবা-মাকে সময় ভাগ করে যৌথভাবে থাকার নির্দেশ দেয়।