বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশের উন্নয়নে নেয়া একটি প্রকল্পের নাম বলতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার পুরান ঢাকায় দোয়া এবং এতিম ও দুস্থদের মধ্যে উন্নতমানের খাদ্য-বস্ত্র ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এর আয়োজন করে।
বিএনপির সমালোচনা করে নানক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বড় বড় কথা বলেন। একটা কাজ দেখান, যে কাজটি আপনার প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া করেছে, অথবা বেগম খালেদা জিয়া করেছে। আমাদের একটি কাজ দেখান বাংলাদেশে, সারাদিন বললেও শেষ হবে না।’
বিএনপির আন্দোলনের হুমকি এবং ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দলটির আন্দোলনের স্মরণ করে আওয়ামী লীগ নেতা আরও বলেন, ‘মির্জা ফখরুল লম্বা-লম্বা কথা বলেন, ঢাকা দখলের ভয় দেখান। বলে কী? সারা বাংলাদেশ আমাদের দখলে ছিল। শুধু ঢাকা দখল করতে পারি নাই বলে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যূত করা যায় নাই।
‘কোন জায়গা দিয়ে বাংলাদেশ দখল করলেন? আপনারা আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করলেন, বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন, বাস যাত্রীদেরকে পুড়িয়ে দিলেন, রেভিনিউ অফিসে আগুন দিলেন, এই অন্তর্ঘাতমূলক কাজগুলোকে আন্দোলন বলেন?’
নানক বলেন, ‘আন্দোলনের নামে আবারও মানুষ পোড়ানোর পরিকল্পনা করলে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়। একটি কথা আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে নিজের বিবেকে জিজ্ঞেস করে বলেন তো, রাস্তা দিয়ে হাঁটেন বিয়ে-শাদিতে যান, সুন্নতে খাৎনায় যান, মসজিদে যান, জুম্মা পড়তে যান, কোথাও কি শেখ হাসিনার সততা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়? ব্যথিত হয়ে জনগণ শেখ হাসিনা থেকে দূরে সরে যায়?
‘শেখ হাসিনাকে দূরে সরানো যাবে না। শেখ হাসিনা জনগণের নেত্রী, বিশ্ব নেত্রী।’
নানক বলেন, ‘দুঃসময়ের নেতাকর্মী ডুকরে ডুকরে কাঁদে, যখন দেখে নতুন একজন আসছে সবদিক দিয়ে স্বাস্থ্য ভালো, তাদের নিয়ে নেতা চলে আমাদেরকে চিনে না, তাদের উপরে আল্লাহ গজব পড়বে। যারা এতিম শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতারণা করবে তাদের উপরেও আল্লাহ গজব পড়বে।’
নেতাকর্মীদের সর্তক করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় দাপট দেখাবেন, শেখ হাসিনার অর্জনকে বিসর্জ্জন দেবেন, এটা করতে দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সূত্রাপুর থেকে পাস করেছিলেন। সেই সূত্রাপুরে দাঁড়িয়ে আমি আপনাদেরকে বলব, দল করতে গিয়ে যারা নিজের বিবেক-ঈমান অর্থের কাছে বিক্রি করে দেয় তারা মানুষ হতে পারে না, তারা অমানুষ।’
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজন সঞ্চালনা করেন দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।