বিভিন্ন সময় বিজ্ঞান ও ইসলাম নিয়ে নানা ধরনের উদ্ভট বক্তব্য দিয়ে আলোচিত মুফতি কাজী ইব্রাহীম আদালতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমান মুফতি ইব্রাহীমকে দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
তার আগে মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ানের এজলাসে নেয়া হয় মুফতি ইব্রাহীমকে। শুরু হয় জামিন ও রিমান্ড শুনানি। শুনানির সময় মহানগর হাকিম কাজী ইব্রাহিমের কাছে তার প্রচারিত বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চান।
মুফতি ইব্রাহীম আদালেতে বলেন, ‘আমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা হলো, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে মুক্ত করতে ৩০ লক্ষ শহীদ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, কিন্তু আজও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। আমার স্বপ্ন, সরকারপ্রধান এ দেশের আলেম সমাজকে ডেকে একদিন বলবেন রাষ্ট্র চালানোর জন্য।
‘কারণ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় যারা ভালো মানুষ তারা নির্যাতনের শিকার হন। আমরা এই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় জুলুম নির্যাতন চাই না। এই দেশের জন্য বঙ্গবন্ধু তার শেষ রক্তবিন্দু বিসর্জন দিয়েছেন।’
এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে অনেক ভালো মানুষ ও দেশপ্রেমিক বলে অভিহিত করে চোখ মুছতে থাকেন।
ইব্রাহীম কিছুক্ষণের জন্য এজলাস কক্ষকে ওয়াজ মাহফিলের ময়দান বানিয়ে ফেলেন তিনি।
সেই সঙ্গে নিজেকে দেশপ্রেমিক দাবি করে তার বর্ণনাও দেন।
এমন সময় বিচারক তাকে থামিয়ে দেন। সেই সঙ্গে রিমান্ডের বিষয়ে বুঝিয়ে বিচারক বলেন, ‘রিমান্ড মানে নির্যাতন নয়। আপনাকে কিছু তথ্য জিজ্ঞেস করা হবে, আপনি যা জানেন তাই উত্তর দেবেন।’
এ সময় মুফতি ইব্রাহীম ডিবি হেফাজতে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানান। ‘রিমান্ড ছাড়াই যা করা হয়েছে’ বলে তার হাত দেখান।
তখন ইব্রাহীমের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মাননীয় আদালত, বাংলাদেশের রিমান্ডে কী হয় তা সবারই জানা আছে। রিমান্ড ফেরত আসামিরা হেঁটে আদালতে উঠতে পারেন না।’
মুফতি ইব্রাহীমকে গত সোমবার রাত ২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে আটক করে ডিবি।
মঙ্গলবার তার নামে অর্থ আত্মসাত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখায় ডিবি।
জেড এম রানা নামের এক ব্যক্তি মঙ্গলবার রাতে প্রতারণার মামলাটি করেন। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি করা হয়েছে ডিবির পক্ষ থেকে।
রানার করা মামলায় একটি স্কুলের টাকা আত্মসাৎ, চাঁদা দাবি ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর ডিবি আইসিটি আইনের মামলায় বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। সে মামলাতেই মুফতি কাজী ইব্রাহীমকে দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।