বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রামুর ধ্বংসযজ্ঞ: বিচার কবে?

  •    
  • ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৭:০১

১৯ মামলায় রামু, উখিয়া ও টেকনাফে ৩৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ হাজার ১৮২ জনের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা করে পুলিশ। এগুলোর মধ্যে বাদীর সম্মতিতে ১টি মামলা প্রত্যাহার হয়। তদন্ত শেষে ১৮ মামলায় ৯৪৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। যেগুলোর বিচার ৯ বছরেও শেষ হয়নি।

২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। ফেসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কক্সবাজারের রামু, উখিয়া ও টেকনাফের বৌদ্ধ বিহার ও বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় রামুর ১২টি বৌদ্ধ বিহার ও ৩০টি বসতবাড়ি।

হামলা চলে পরদিনও। উখিয়া ও টেকনাফের আরও ৭টি বৌদ্ধ বিহার ও ১১টি বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলা ও লুটপাট চালানো হয় তিন উপজেলার আরও ৬টি বৌদ্ধ বিহার ও শতাধিক বাড়িঘরে।

এসব ঘটনায় রামু, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ হাজার ১৮২ জনের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা করে পুলিশ। এগুলোর মধ্যে বাদীর সম্মতিতে ১টি মামলা প্রত্যাহার হয়। তদন্ত শেষে ১৮ মামলায় ৯৪৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

তবে নয় বছরেও এগোয়নি মামলাগুলোর বিচারকাজ। এত বছরেও খোঁজ মেলেনি উত্তম বড়ুয়ার, যার বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক আইডিতে ভুয়া ছবি ট্যাগ করে তা ছড়িয়ে দেয়া হয়। উসকে দেয়া হয় স্থানীয় মুসলমানদের।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসাইন বলেন, ‘সেদিন রামুর চৌমুহনী মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছিল। সমাবেশ শেষে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে বিক্ষুব্ধরা।

‘ঘটনার পর পুলিশ ওই ছবি নিয়ে কাজ করে। তদন্তে ওই ছবিটি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। ওই ভুয়া ছবি ছড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছিল।’

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা সুমথ বড়ুয়া বলেন, ‘২৯ সেপ্টেম্বর আসলে শুধু তৎপরতা দেখা যায়৷ এরপর আর কথা হয় না। প্রকৃতপক্ষে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয় না। সেই সময় ইউএনও, ওসি, ডিসি, এসপি যারা ছিলেন, তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণ তদন্ত করা হয়েছে কি না, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়েছে কি না, সেটি বৌদ্ধ সমাজ আদৌ জানতে পারেনি। এগুলো তো জানা দরকার।’

রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া বলেন, ‘এখনো জানি না কেন হামলা হয়েছিল। সেদিন অনেক নিরপরাধ মানুষকেও আসামি করা হয়। আবার অনেক প্রকৃত অপরাধী ছাড় পেয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে। তারপরও আমরা চাই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে রামুর সম্প্রীতি ধরে রাখতে। এ ছাড়া মামলার অগ্রগতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। তবে বিশ্বাস করি, সরকার দ্রুত বিচার শেষ করবে।’

উত্তম বড়ুয়া কোথায়?

যাকে ঘিরে রামুতে হামলার সূত্রপাত, সেই উত্তম বড়ুয়ার খোঁজ ৯ বছরেও মেলেনি। তার পরিবারও জানে না উত্তম এখন কোথায়।

নিখোঁজ হওয়ার আগ পর্যন্ত উত্তম বড়ুয়া রামু সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাইটুপি গ্রামের সুদত্ত বড়ুয়ার ছেলে।

উত্তমের বিষয়ে জানতে চাইলে তার স্ত্রী রীতা বড়ুয়া বলেন, ‘২৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে উত্তম ঘর থেকে বেরিয়ে যান। এরপর তিনি আর ঘরে ফেরেননি। গত ৯ বছর ধরে তিনি নিখোঁজ।’

পরিবারের পাশাপাশি এলাকার লোকজনও জানেন না উত্তম কোথায়।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম বলেন, ‘ঘটনার রাত থেকে উত্তমের আর খোঁজ মেলেনি। এরপর থেকে সে নিখোঁজ।’

থমকে আছে মামলা

রামুর ঘটনায় মামলা হলেও বিচার শেষ হয়নি ৯ বছরেও।

সাক্ষীর অভাবে বিচার-প্রক্রিয়া থমকে আছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম।

তিনি বলেন, ‘বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলার ঘটনায় মোট ১৯টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে বাদীর সম্মতিতে ১টি মামলা প্রত্যাহার হয়। বাকি ১৮টির বিচার চলমান রয়েছে। সাক্ষীরা তৎপর হলে বিচার দ্রুত হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর