রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাটার ঘটনায় নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্লাটফর্ম ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক’।
বুধবার ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক’ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ সামগ্রিকভাবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে দুর্বৃত্তপনা, অগণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও প্রশাসনের অবাধ স্বেচ্ছাচারীতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তার বহিঃপ্রকাশ এই ঘটনা৷
আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান কিংবা কোনো আইনেই একজন নাগরিকের চুল কিংবা পরিচ্ছদের ওপর কোনোরূপ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি৷
বিবৃতিতে অবিলম্বে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত করার ঘটনায় যুক্ত ব্যক্তিদের স্থায়ী বহিষ্কার, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন দরজায় কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শিক্ষার্থীরা হলে ঢোকার সময় যাদের মাথার চুল হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের সামনের অংশের বেশ খানিকটা কেটে দেন তিনি। এভাবে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাটা পড়ে।
ওই ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ভাইরাল হয়। এ নিয়ে সোমবার দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। মীমাংসা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুরে পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন।
তবে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন। এর প্রতিবাদ করলে নাজমুল হাসান তুহিন নামে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের হুমকি দেন।
এই ঘটনার পর ‘অপমান সইতে না পেরে’ তুহিন রাতে দ্বারিয়াপুরের শাহমুখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা আটকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।