সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেয়ার ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে এনেছেন এক আইনজীবী।
বিচারপতি মো. মুজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিষয়টি নজরে আনেন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব। এ বিষয়ে শুনানির জন্য বেলা আড়াইটায় সময় রাখা হয়েছে।
বিষয়টি আদালতের নজরে আনা পল্লব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি আদালতের নজরে এনেছি। আদালত বেলা আড়াইটায় শুনবে। এর মধ্যে আমরা রিট ফাইল করে দেব। রিটে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে।’
২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন দরজায় কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। শিক্ষার্থীরা হলে ঢোকার সময় যাদের মাথার চুল হাতের মুঠোর মধ্যে ধরা যায়, তাদের সামনের অংশের বেশ খানিকটা কেটে দেন তিনি। এভাবে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন ওই শিক্ষক।
ওই ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ভাইরাল হয়। এ নিয়ে সোমবার দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। মীমাংসা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুরে পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন।
তবে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন। এর প্রতিবাদ করলে নাজমুল হাসান তুহিন নামের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে গালিগালাজ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের হুমকি দেন।
ওই ঘটনার পর ‘অপমান সইতে না পেরে’ তুহিন রাতে দ্বারিয়াপুরের শাহমুখদুম ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে দরজা আটকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। সহপাঠীরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনা জানাজানির পর থেকে উত্তাল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। আন্দোলনের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে তিনটি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন।
তাতে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। ফারহানা ইয়াসমিনকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
চার দফা থেকে সরে এসে তারা এখন ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ীভাবে অপসারণের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ‘এক দফা এক দাবি’ আদায়ে বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-১-এ আমরণ অনশনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।