চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আরামবাগ মহল্লার অন্তত ২০টি মিটার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার রাতে। এ ঘটনায় মহল্লাবাসীরা সদর থানায় মৌখিক অভিযোগও দিয়েছেন। তবে এখনও দুর্বৃত্তদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে মহল্লার লোকজনের ধারণা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই লোক পাঠিয়ে এই কাজ করে থাকতে পারে।
আরামবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির সামনে থাকা মিটারগুলোর কোনোটির বক্স ভেঙে গেছে, কোনোটির স্ক্রিনও নষ্ট করা হয়েছে। একসঙ্গে এতোগুলো মিটার ভাঙচুর কেন করা হয়েছে, কারাই বা এ কাজ করেছে- প্রশ্ন স্থানীয়দের।
তাদের কেউ কেউ আবার বলছেন, প্রিপেইড মিটার না লাগানোর কারণেই তাদের পুরোনো মিটার ভেঙে দেয়া হচ্ছে। তারা অভিযোগ করছেন নেসকো এমন কাজ করেছে।
বাড়ির বিদ্যুতের মিটার ভাঙা প্রসঙ্গে সৈয়দ আলী মাস্টার বলেন, ‘সকালে উঠে দেখি মিটারের বক্সটা বাড়ি মেরে ফাটিয়ে রেখেছে। আরও অনেকের এমনটা হয়েছে। সবাই মিলে থানায় গিয়েছিলাম, থানায় বলেছে সবাই একসঙ্গে লিখিত দিতে।’
তিনি জানান, গত সোমবার রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোহাম্মদ জাকারিয়ারও। তিনি বলেন, ‘এর আগে আমার বাড়ির মিটার পরিবর্তনের জন্য বলা হয়েছিল। আমি সেই সময় মিটার লাগানোর বিষয়ে রাজি হয়নি। আমাদের এলাকায় অনেকেই আগ্রহী হয়নি প্রিপেইড মিটার লাগাতে। অনেকটা সকলের আপত্তির মুখেই নেসকোর কর্মীরা প্রিপেইড মিটার না লাগিয়ে ফিরে যায়।
‘মঙ্গলবার সকালে উঠে বাড়ির বাইরে এসে দেখি, আমার বাড়ির নয়টি মিটারের চারটি ভাঙা। রাতে কে বা কারা ভেঙে ফেলেছে। নেসকোকেও সন্দেহ হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, মিটার ভাঙার বিষয়টি ভুক্তভোগীরা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। ওই এলাকায় পুলিশ গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চলমান প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতেই রাতে মিটার ভাঙার কাজটি করেছে কেউ। নেসকো একটা প্রতিষ্ঠান, কেন এমন কাজ করতে যাবে? আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১৫ আগস্ট থেকে ডিজিটাল মিটার পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ শুরু করেছে নেসকো। তবে তাতে রাজি হননি বাসিন্দারা। এর প্রতিবাদে মানববন্ধনও হয়। এরপর এক গণশুনানীতে নাগরিক কমিটিকে নেসকো জানায়, গ্রাহকদের বুঝিয়েই প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ করা হবে।
এরপরও বিভিন্ন এলাকায় প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছে নেসকো কর্মীরা।