প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ৩ গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দিনভর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। মিছিল করা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে বিবাদে জড়ায় দুই গ্রুপ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিভিন্ন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে আনন্দ মিছিল, কেক কাটা ও দুঃস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণে আলাদা কর্মসূচি নেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ব্যানারে তিনটি গ্রুপ।
অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি প্রতিরোধে সকাল থেকে বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) এক শ সদস্য ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের তিন গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ছবি: নিউজবাংলা
বেলা দেড়টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক থেকে আনন্দ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় জিসান-রিয়াজ মোল্লা গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান নেয় রক্তিম-জিহাদ গ্রুপ। এসময় দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হলে পুলিশ ও শিক্ষকরা সবাইকে সরিয়ে দেয়।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপনে স্থানীয় সাংসদ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের দুই গ্রুপ এবং সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর একটি গ্রুপ ছাত্রলীগের ব্যানারে একই সময়ে কর্মসূচি দেয়।
বিগত দিনে এককভাবে সাদিক আব্দুল্লাহর সমর্থক গ্রুপ ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এবারই প্রথম একাধিক গ্রুপ আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করে৷
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ জিসান আহমেদ বলেন, ‘গত সাত বছরে কখনো প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন আলাদাভাবে উদযাপন করেনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। হঠাৎ কেন এমন হলো সেটা আমার জানা নেই।’
আরেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ মোল্লা জানান, বিগত দিনে সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিজেদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। আজও তার নির্দেশনা অনুযায়ী আনন্দ মিছিল ও কেক কেটে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালন করা হয়েছে।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের তিন গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ছবি: নিউজবাংলা
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের সমর্থক হিসেবে পরিচিত অমিত হাসান রক্তিম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, আনন্দ মিছিল ও মসজিদে দোয়ার আয়োজন করি।’
অন্যদিকে ছাত্রলীগের আরাফাত-রিদম গ্রুপের এ কে আরাফাত হোসেন বলেন, ‘মেয়র ও প্রতিমন্ত্রীর গ্রুপের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নিলেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আনন্দ মিছিল ও কেক কাটার আয়োজন করি।’
বিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর থানা) শারমিন সুলতানা রাখী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একাধিক কর্মসূচি শুরু করে কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত শিক্ষার্থীরা। এসময় দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালনের অধিকার সবার রয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে কর্মসূচি পালন হোক। তিন গ্রুপ আলাদাভাবে দিনটি উদযাপনের উদ্যোগ নেয়ায় কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।’