অল্প সময়ের মধ্যে আইন করে নির্বাচন কমিশন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী জানতে চান, ‘আইন করলেই কি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন করা যাবে? আমরা কি মঙ্গলগ্রহ থেকে, না হাওয়াই দ্বীপ থেকে নির্বাচন কমিশনের প্রধানকে নিয়ে আসব?’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
ডা. রাজ্জাক বলেন, ‘আপনারা পত্রিকায় দেখেছেন ৫২ জনের মতো বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি তারা পেশায় খুবই দক্ষ, বিবৃতি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন করার জন্য আইন করতে হবে। আমি স্বীকার করি, আমাদের সংবিধানে আইনটি রয়েছে।
‘কিন্তু আজ পর্য়ন্ত এই বিএনপি স্বৈরাচাররা, এরশাদ ২৭ বছর ক্ষমতায় ছিল তারা কোনো আইন করেনি। আমরাও করতে পারি নাই। তার জন্য নির্বাচন বসে থাকবে না।’
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারাই দাবি করেন ১৯৯১ সালে খুবই সুন্দর নির্বাচন হয়েছে। ২০০১ সালে অনেক সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। তখন কী কোনো আইন ছিল?
‘আজকে যে বুদ্ধিজীবীরা বিবৃতি দিয়েছেন আপনারা মেধাবী, পেশায় দক্ষ; আমি আপনাদের সম্মান করি। সঙ্গে এটিও বলতে চাই, আপনারা যে নির্বাচন কমিশনের কথা বলছেন, আইন করলেই নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন করা যাবে? আমরা কি মানুষ (নিরপেক্ষ) আবিষ্কার করব? আমাদের মাঝ থেকেই করতে হবে।’
তিনি দাবি করেন, ‘যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবেন, তাকে নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
‘এখানে পয়েন্ট হলো, নির্বাচন কমিশনে যখন যাবেন, যে নির্বাচন কমিশনার তিনি শপথ নেবেন, তার একটি কথাই থাকবে জাতিকে তিনি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন। যে শপথ করে তার তো দায়িত্ব সেটি পালন করার। নির্বাচনের সময় সব ক্ষমতা থাকে তার হাতে। সরকারের কোনো ক্ষমতা থাকবে না। কাজেই নির্বাচন কমিশন যদি ব্যর্থ হয়, তার দায়িত্ব আমরা কেন নেব?’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমেরিকার ফেডারেল কোর্টে, সুপ্রিম কোর্টে যারা প্রধান বিচারপতি থাকেন, তারা যেদিন শপথ নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে, সেদিন থেকে তারা নিরপেক্ষ। এটি তাদের নৈতিক দায়িত্ব। কাজেই নিরপেক্ষ যদি কেউ না থাকে, সে দায়িত্ব আমরা নেব না।’
গণতান্ত্রিক দেশে কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয় না বলে জানান তিনি।
বলেন, ‘যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সে সরকারের সময়ে নির্বাচন হয়। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।’
আলোচনায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জীবন ও কর্ম তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
সভাপতির বক্তব্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের আলোকবর্তিকা। মুকুট ধন্য হয় যে মণিতে শেখ হাসিনা সেই মণি।’
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবউল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজমসহ অনেকে।