রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান সড়কের ধারে দিনভর ফেলে রাখা হচ্ছে আবর্জনা। এসব ময়লা নেয়া হচ্ছে বাসাবাড়ি, হোটেল রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে। খোলা স্থানে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা আবার ছিটাচ্ছে পশুপাখি। ফলে নষ্ট হচ্ছে রাস্তার স্বাভাবিক পরিবেশ। নাকে রুমাল চেপে পথচারীদের চলাচল করতে হচ্ছে। ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে পরিবেশও দূষিত হচ্ছে।সিটি করপোরেশন বলছে, শিগগিরই এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে করা হয়েছে পাঁচটি সেকেন্ডারি সেন্টার। আরও কয়েকটির নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন।
পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে পরিচিতি আছে রাজশাহীর। এখানকার অবকাঠামো, সড়কের মাঝের বিভাজনে ফুলের গাছ, টাইলস বসানো ফুটপাত এই নগরকে করে তুলেছে আকর্ষণীয়। কিন্তু রাস্তার পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ এই সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মীরা প্রতি রাতেই ময়লা ফেলে আসে নির্ধারিত ভাগাড়ে। নগরীর সিটি হাট এলাকায় এই ভাগাড়ে ট্রাকে করে ময়লা-আবর্জনা ফেলার আগে একাধিক ধাপ আছে। মূলত বাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ময়লা সংগ্রহ করে শহরের নির্ধারিত কয়েকটি জায়গায় জমা করা হয়।
সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডেই এ রকম কিছু জায়গা নির্ধারিত রয়েছে। এসব স্থান থেকে ট্রাকে করে সেগুলো অপসারণ করা হয়। তবে সারা দিন ধরে রাস্তার ওপরের এসব ময়লার স্তূপ দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে মানুষের।
নগরীর সিঅ্যান্ড মোড়, খ্রিস্টান মিশন হাসপাতালের মোড়, কোর্ট হড়গ্রাম বাজার, কোর্ট স্টেশন রোড, মাদ্রাসা মাঠের পাশে, উপহার সিনেমা হল রোড, কাজলা, শিরোইল, আরডিএ মার্কেটের পেছনসহ বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী ভাগাড় নির্মাণ করা হয়েছে।
কোনো কোনো এলাকায় রাস্তার পাশে আবার কোনো এলাকায় রাস্তার ওপরেই ময়লার স্তূপ করা হচ্ছে। বৃষ্টি হলে এসব বর্জ্য আরও বেশি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে। বর্জ্য শোধনের আধুনিক কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশে।
রাজশাহীর সাহেববাজার এলাকার বাসিন্দা সজিব আলী বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে বমি আসার উপক্রম হয়। শ্বাসকষ্টসহ হাঁচি-সর্দি লেগেই আছে।
রাজশাহী কোর্ট স্টেশন এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী শাহিন আলম। তিনি বলেন, ‘৪-৫ বছর ধরে এই এলাকায় থাকি। প্রতিদিনই এই পথ দিয়ে যেতে হলে নাকে কাপড় দিয়ে যেতে হয়। গন্ধে বাঁচা যায় না। বৃষ্টি হলে সেই ময়লা আবার পানির সঙ্গে সড়কে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তো হাঁটাই দায়। আধুনিক শহর, কিন্তু এ রকম ময়লা ছড়িয়ে থাকলে কী করে চলে?’
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মামুন ডলার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজশাহী শহরে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩০০ টন বর্জ্য হয়। সড়কের পাশে এসব ময়লা রাখায় নগরবাসীর ভোগান্তি হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। এরই মধ্যে ৫টি সেকেন্ডারি সেন্টার হয়ে গেছে। আরও ৬টি নির্মাণে টেন্ডার হয়েছে। এগুলো হলে রাস্তায় আর ময়লা থাকবে না।’