সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ‘ব্যঙ্গাত্মক’ স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছিল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষক সিরাজুম মুনিরার বিরুদ্ধে।
ওই মামলায় বিবাদীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় রংপুরে নবগঠিত সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল মজিদ মুনিরাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী রুহুল আমীন তালুকদার।
তিনি বলেন, সোমবার মামলার দিন ধার্য ছিল। শুনানি শেষে ওই শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইজার আলী নিউজবাংলাকে জানান, ‘আমরা গত মার্চ মাসে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির মতামত না পাওয়ায় আমরা তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছিলাম।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে তাজহাট থানায় গত বছরের ১৩ জুন মামলাটি করেছিলেন রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল। ওই দিন রাতেই তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৪ জুন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গত বছরের ১৩ জুন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। তার মৃত্যু নিয়ে মুনিরা ফেসবুকে ‘যোগ্য নেতৃত্বে দেশ নাসিম্যা মুক্ত হলো’ লিখে পোস্ট দেন।
মুনিরাকে আক্রমণ করে কমেন্টস করতে থাকেন ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। তার শাস্তিও দাবি করা হয়। একপর্যায়ে পোস্টটি মুছে দেন তিনি। কিন্তু পোস্টের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে।
ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে এই শিক্ষক আগের পোস্টের জন্য ক্ষমা চেয়ে আরেকটি পোস্ট দেন। এতে তিনি লেখেন, ‘একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদের মৃত্যু সম্পর্কে ভিন্নভাবে অভিমত ব্যক্ত করা ঠিক নয়। কর্মফল যাই হোক না কেন; মৃত্যু সব সময় বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক। এটি অনুধাবনের পরপরই আমি আমার বক্তব্য থেকে সরে এসেছি। সেই সঙ্গে আমার আগের দেয়া পোস্ট সরিয়ে নিয়েছি। তারপরও যারা আমার পোস্টে আঘাত পেয়েছেন; তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।’
মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া প্রসঙ্গে কথা বলতে সিরাজুম মুনিরাকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল নিউজবাংলাকে জানান, ‘আমি বিষয়টি মুখে মুখে শুনেছি এখনো কাগজপত্র পাইনি। আদালত কী নির্দেশনা দিয়েছেন তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’