সমাজের কোনায় কোনায় যে অন্যায় ও অসংগতি রয়েছে সেগুলো তুলে ধরাই সাংবাদিকদের কাজ। তাদের কারণে চারপাশে ঘটে যাওয়া ইস্যু সম্পর্কে আমরা জানতে পারি।
বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে সোমবার এসব মন্তব্য করা হয়।
সারা দেশে চড়া সুদে ঋণদাতা মহাজনদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি শেষে রায়ের সময় এসব মন্তব্য উঠে আসে।
আদালতের এক আদেশে দেশের অননুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড তদন্ত করতে বিশেষ কমিটি গঠনে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
আদালত চড়া সুদে ঋণদানকারী স্থানীয় মহাজনদের তালিকা দিতে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিকে নির্দেশ দেয়। ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এ সময় রিটকারী আইনজীবী সায়েদুল হক সুমনকে সতর্ক করে হাইকোর্ট।
বিচারক আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান আইনজীবী সুমনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ভবিষ্যতে যে ইস্যু নিয়ে আসবেন সেগুলো নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ও গবেষণা করে আসবেন। জাতীয় পত্রিকাগুলো যে বিষয় নিয়ে লেখে হঠাৎ করে সেগুলো নিয়ে আসবেন না।
বিচারক বলেন, পত্রিকা একটি তথ্য দিয়েছে। পথ দেখিয়েছে। সমাজে কী কী অসংগতি হয় সেগুলো তুলে ধরাই গণমাধ্যমকর্মীদের কাজ। তাই বলে পত্রিকাগুলো একটা লাইন লিখে দিলে সেটা ধরেই অবৈধ ঘোষণা করতে হবে, ব্যাপারটি এমন নয়। এ ধরনের ইস্যু নিয়ে কম করে হলেও তিন-চার মাস ধরে কাজ করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘গবেষণা করে যথাযথভাবে আবেদনটি করবেন। হুট করে নয়, দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আবেদন করবেন। যেন আমরা আদেশ দিতে পারি।’
গত ২২ সেপ্টেম্বর এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষে আজ আদেশ দেয় আদালত। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চড়া সুদে ঋণের জালে কৃষকেরা’ শিরোনামে গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিট করেন। রিটে মহাজনদের উচ্চহারে অনানুষ্ঠানিক ঋণ প্রদান নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়া হয়।