বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংশোধনের পুঁজিবাজারে নিষ্প্রভ আরও এক দিন

  •    
  • ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:৫২

লেনদেন আবার কমে ২ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমেছে। আগের দিন সূচকের পতন হলেও ১২ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। হাতবদল হয় ২ হাজার ২৫৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রায় ৩০০ কোটি টাকা করে লেনদেন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বড় উত্থানের পর সংশোধনের তৃতীয় সপ্তাহে এসেও গতি ফিরে পাচ্ছে না পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে পতনের পর দিন হারানো সূচক ফিরে পেলেও লেনদেন কমে গেছে আবার।

সূচক বাড়লেও বেশির ভাগ শেয়ার দর হারিয়েছে। ১৪১টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২০২টি শেয়ারের দর।

দর বৃদ্ধির তুলনায় পতন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা দেড় গুণ হলেও সূচক বেড়েছে গ্রামীণফোন, আইসিবি, লাফার্জ হোলসিম ও ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানির মতো বড় মূলধনি কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে।

এই চারটি কোম্পানির কারণেই সূচকে যোগ হয়েছে ১১.০৪ পয়েন্ট।

অন্যদিকে দরপতন বেশি হয়েছে স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির। সবচেয়ে বেশি পতন হওয়া সাতটি কোম্পানির সবগুলোই লোকসানি, স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। এর মধ্যে একটি ২০১৯ সালের পর হিসাবও দিচ্ছে না। গত কয়েক মাসে এসব কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছিল অস্বাভাবিক হারে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রবণতা শুরু হয়েছে। সূচক এক দিন বাড়লে পরদিন কমে- লেনদেনেও একই প্রবণতা।

টানা তিন সপ্তাহ রোববার সূচকের পতনে লেনদেন শুরু হলেও পরদিনই আবার বেড়েছে সূচক।

আগের দিন সূচক পড়েছিল ১৩ পয়েন্ট আর সোমবার বেড়েছে ১৪ পয়েন্ট।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের চিত্র

তবে লেনদেন আবার কমে ২ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমেছে। আগের দিন সূচকের পতন হলেও ১২ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। হাতবদল হয় ২ হাজার ২৫৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। প্রায় ৩০০ কোটি টাকা করে লেনদেন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

পতন দিয়ে সপ্তাহ শুরুর পর দ্বিতীয় দিন সূচক বাড়ার ঘটনা আগের ‍দুই সপ্তাহেও হয়েছে।

১২ সেপ্টেম্বর রোববার সূচক কমে ৫৬ পয়েন্ট, পরদিন বাড়ে ১৬ পয়েন্ট।

১৯ সেপ্টেম্বর পরের রোববার সূচক পড়ে ৩৭ পয়েন্ট, পরদিন বাড়ে ১৪ পয়েন্ট।

স্বল্প মূলধনির পতন

সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই পতনের মধ্যে থাকা স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানিগুলো আরও খানিকটা দর হারিয়েছে।

বারবার সতর্কতার পরেও জুলাই ও আগস্ট মাসে এসব শেয়ারে বিনিয়োগ ক্রমেই বাড়িয়ে চলেছিলেন বিনিয়োগকারীরা। তবে সংশোধনের তৃতীয় সপ্তাহে এসব কোম্পানির শেয়ারদরই বেশি কমছে।

সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে দেশ গার্মেন্টস। ৭.৮১ শতাংশ কমেছে এই কোম্পানিটির শেয়ার।

সোমবার সূচক বৃদ্ধি ও পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা ১০টি করে কোম্পানি

এক দশকেও লভ্যাংশ দেয়ার ইতিহাস না থাকার পরেও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলা মেঘনা মিল্কের দর কমেছে ৬.৩৩ শতাংশ।

লোকসানি স্বল্প মূলধনি শ্যামপুর সুগারের দর কমেছে ৪.৯৯ শতাংশ। সংশোধন শুরু হওয়ার পর এই কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ২০ টাকার বেশি।

আগের দুই দিন বেড়ে যাওয়া ইভেন্স টেক্সটাইল দর হারিয়েছে ৪.৭৩ শতাংশ। ৪.২৬ শতাংশ কমেছে আরেক স্বল্প মূলধনি লিবরা ইনফিউশনের দর।

লোকসানি দুলামিয়া কটনের দর ৪.২৩ শতাংশ, বন্ধ থাকা মিথুন নিটিংয়ের দর ৩.৯২ শতাংশ, লোকসানি নর্দার্ন জুটের দর ৩.৭৩ শতাংশ, অ্যামবি ফার্মার দর ৩.৪৩ শতাংশ কমেছে।

লেনদেনে সেরা ওষুধ, দর বৃদ্ধিতে প্রকৌশল

সবচেয়ে বেশি লেনদেন আবার দেখা গেছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। তবে তা আগের দিনের তুলনায় বেশ কম।

আগের দিন লেনদেন ৩৬৮ কোটি টাকা হলেও তা কমে হয়েছে ২৮৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

এই খাতে সবচেয়ে বেশি সেন্ট্রাল ফার্মার দর বেড়েছে ৭.৭২ শতাংশ। তারপরেই আছে একটিভ ফাইন, যার দর বেড়েছে ৬.০৪ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা অ্যাডভেন্ট ফার্মার দর বেড়েছে ২.৬৭ শতাংশ।

এ খাতের মোট ১২টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ১৭টির, পাল্টায়নি একটির দর আর একটির লেনদেন ছিল অপরিবর্তিত।

দর পতনের দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল লিব্রা ইনফিইশন লিমিটেড, যার শেয়ার দর ৯৭৩ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৯৩২ টাকা ৪০ পয়সা।

তারপরেই আছে অ্যামবি ফার্মা, যার দর কমেছে ৩.৪৩ শতাংশ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সোমবার এই পাঁচটি খাতে লেনদেন হয়েছে সবচেয়ে বেশি

প্রকৌশল খাতে ১৩ টি কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে বেড়েছে ২৮টির, অপরিবর্তিত ছিল একটির দর।

এই খাতে লেনদেনও বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২২৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সেটি বেড়ে হয়েছে ২৭৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।

এই খাতে সবচেয়ে বেশি ৪.৫৭ শতাংশ বেড়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের দর। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৪.০৪ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা জিপিএইচ ইস্পাতের দর বেড়েছে ৩.৬৪ শতাংশ। চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিএসআরএম স্টিলের দর বেড়েছে ৩.২৫ শতাংশ।

এই খাতে সবচেয়ে বেশি ৩.০৯ শতাংশ দর হারিয়েছে দেশবন্ধু পলিমার। নাভানা সিএনজির দর কমেছে ২.২৯ শতাংশ।

বস্ত্র খাতের লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে এ খাতের।

আগের দিনের তুলনায় দর কমেছে। আগের দিন লেনদেন ছিল ২৮১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সেটি কমে হয়েছে ২২৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

লেনদেনে ৩৮টি কোম্পানির শেয়ার দর পতন হয়েছে। বেড়েছে ১৬টির। চারটি কোম্পানির শেয়ার দর ছিল আগের মতোই।

এ খাতের সবচেয়ে বেশি মতিন স্পিনিংয়ের দর বেড়েছে ৭.০১ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ২.৬০ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভিএসএফ থ্রেডের দর ২.২৫ শতাংশ এবং চতুর্থ অবস্থানে থাকা আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ২.১৩ শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দর হারানো ৭টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই বস্ত্র খাতের।

ব্যাংক ও বিমার নিস্তার নেই

গত অর্থবছরে দারুণ লভ্যাংশ আর চলতি অর্থবছরের অর্ধবার্ষিকে আরও বেশি আয় করার পরেও ব্যাংক খাতের ঝিমিয়ে থাকা নিয়ে আলোচনার মধ্যে এই খাতের শেয়ারগুলো আরও দর হারিয়েছে।

তবে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। সোমবার এই খাতের লেনদেন হয়েছিল ৯২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ১০৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।

এ খাতের ১৪টি কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে। বিপরীতে দর বেড়েছে নয়টির, আর পাল্টায়নি নয়টির।

তবে দর বাড়া ও কমার হার শতকরা হিসেবে খুবই কম।

সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়া আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের দর বেড়েছে ২.৮৯ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইবিএলের দর বেড়েছে ১.৫১ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা উত্তরা ব্যাংক ১.১৬ শতাংশ ও চতুর্থ অবস্থানে থাকা সাউথবাংলা ব্যাংকের দর বেড়েছে ০.৯৬ শতাংশ।

অন্যদিকে রূপালী ও মার্কন্টাইল ব্যাংকের দর সবচেয়ে বেশি কমেছে ১.৮৮ শতাংশ করে, আইএফআইসি ব্যাংকের ১.২৭ শতাংশ ও এনবিএলের দর কমেছে ১.১৯ শতাংশ।

প্রধান খাতগুলোর মধ্যে এই ছয়টিতে লেনদেন কম হয়েছে সোমবার

বিমা খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ১৬২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ২১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

এই খাতের ২০টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে, চারটির পাল্টায়নি কমেছে বাকি ২৭টির দর।

বিমা খাতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ৯.৯৮ শতাংশ বেড়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়া বিএনআইসিএলের দর ২.৬৯ শতাংশ, তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়া রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ২.০৪ শতাংশ এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ ০.৯৭ শতাংশ বেড়েছে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর।

আর সবচেয়ে বেশি ৩.২৯ শতাংশ দর হারিয়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া প্রাইম লাইফের দর ৩.২৮ শতাংশ, গ্রোগ্রেসিভ লাইফের দর ২.৬০ শতাংশ, রূপালী লাইফের দর ২.৮৩ শতাংশ কমেছে।

অন্যান্য খাতের লেনদেন

প্রধান অন্যান্য খাতগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দরপতনের সঙ্গে লেনদেন ও কমেছে।

এই খাতে হাতবদল হয়েছে ১৪৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৮৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির দর কমেছে, ৮টির বেড়েছে আর একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।

আর্থিক খাতে লেনদেন হয়েছে ১৭১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৯৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

এ খাতের আটটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর বেড়েছে। কমেছে ১১টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটির দর।

বিবিধ খাতের ১৪টি লেনদেন হয়েছে ৮২ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১২৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।

এই খাতে ১৪টি কোম্পানির মধ্যে আটটির দর বেড়েছে। ছয়টির দর কমেছে।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১০টির, কমেছেও সমপরিমাণ।

লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ইউনিটগুলোর মধ্যে ২৩টি ফান্ডের দর কমেছে। ৬টির দর বেড়েছে আর বাকি ৭টির দর আগের দিনের মতোই আছে।

হাতবদল হয়েছে কেবল ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার, আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২৫১ পয়েন্টে।

শরিয়াভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৪ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৪ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১০ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৭৬ পয়েন্টে।

দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২ হাজার ২৫৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এক দিনে লেনদেন কমেছে ২৭৭ কোটি টাকা।

চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২১ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ১৪৮ দশমিক ৩০ পয়েন্টে।

৩২১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩১টির, কমেছে ১৬৫টির ও পাল্টায়নি ২৫টির।

লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯৫ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর