শেরপুর জেলার উত্তর সীমান্তজুড়ে বিস্তৃত গারো পাহাড়। মৌসুমের পরিবর্তন ও দীর্ঘদিন পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় ছিল না পর্যটকদের আনাগোনা। সুযোগ পেয়ে প্রকৃতি তার মতো করে নিজেকে গড়ে নিয়েছে। নানা রঙের ফুলে রূপ-যৌবনে হয়ে উঠেছে অনন্য।
পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানের লেকের স্বচ্ছ পানি সে সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
নয়নাভিরাম গারো পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে নতুন করে ছুটেছেন পর্যটকরা। সারা দেশ থেকে মানুষ পাহাড়ে যাচ্ছেন প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে।
গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখাতে শেরপুর জেলা প্রশাসন গড়ে তুলেছে গজনী অবকাশ। পাশাপাশি বন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে মধুটিলা ইকোপার্ক নামে দুটি পর্যটন কেন্দ্র।
সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে গোটা গারো পাহাড়, নানা গাছে ফুটেছে বিভিন্ন ধরনের ফুল। পাহাড়ি ঝর্ণাগুলোতে ছুটে চলেছে পানি। আর পাহাড়ের মাঝে মায়াবি লেক আলাদা রূপ দিয়েছে পর্যটন এলাকাটিকে।
গারো পাহাড়ের সৌন্দর্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতীর ফারুক হোসেন নামের এক ব্যক্তি জানান, অনেকদিন পর এবার গারো পাহাড় সবুজে সবুজে, ফুলে ফুলে নতুন রূপ পেয়েছে। এখন দেখতে অনেক ভালো লাগছে।
শেরপুরের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ পাহাড়ে আমি অনেক বছর ধরেই আসি। এত সুন্দর কখনো দেখিনি। মনটা ভরে যায়।’
গাজীপুর থেকে আসা যুবক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গারো পাহাড়ের কথা অনেক শুনেছি। কিন্তু এতো সুন্দর তা কখনো জানা ছিল না। এখানে এসে আমার প্রাণটা ভরে গেছে।’
শেরপুরের মহসিনা খাতুন বলেন, ‘আমি মায়াবি লেকে এসেছি। এতো সুন্দর একটা জায়গা, অথচ আগে আসা হয়নি। তবে এখানে আসা রাস্তা নাই। তাই হেঁটে হেঁটে অনেক পথ আসতে হলো। কীভাবে অনেকদূর হেঁটে আসলাম পাহাড়ের সৌন্দর্যের কারণে বুঝতেই পারি নাই।’
সাহানাজ নামের আরেক নারী বলেন, ‘আমি মায়াবি লেকে এসেছি অনেক কষ্ট করে, কিন্তু এখানে এসে সৌন্দর্য দেখে মনটা ভরে গেছে।’
প্রিয়া মং বলেন, ‘আমি ঢাকায় লেখাপড়া করি। অনেকদিন পর বাড়িতে এসে দেখি পাহাড়টা অনেক সুন্দর হয়ে গেছে। এখানে এসে আমার আমাদের বাড়ি তো চিনতে কষ্ট হয়েছে। পাহাড় এতো সুন্দর করে সেজেছে।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে গজনী অবকাশ কেন্দ্র খুলে দিয়েছি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় পাহাড়ের সৌন্দর্য আরও বেড়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, পর্যটকরা তা উপভোগ করবেন।’
শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশিদ বলেন, ‘গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার অনেক দর্শনার্থীর সমাগম হবে। পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে এরই মধ্যে আসতে শুরু করেছেন অনেক দর্শনার্থী। ফলে এখানকার করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’