বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পর্যটন মহাপরিকল্পনা হবে কবে?

  •    
  • ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:১৮

পর্যটন খাতের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইপি গ্লোবালকে কাজ দেয়া হয়, কিন্তু করোনা মহামারির কারণে শুরুতেই হোচট খায় এটি। এখন আবার শুরু হচ্ছে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ।

বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ সোমবার। প্রতি বছর ঘটা করে দেশে দিনটি পালন করা হয়। এ খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও তার বাস্তবায়ন দেখা গেছে সামান্যই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে পর্যটনের জন্য সমন্বিত কোনো মহাপরিকল্পনা না থাকায় বিক্ষিপ্ত পরিকল্পনা কাজে আসছে না। সরকার বলছে, এ খাতের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হলেও তা আটকে আছে কোভিডের কারণে।

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর এ খাতের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৯ সালে এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ দেয়া হয় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইপি গ্লোবালকে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে ২০২০ সালের শুরুতেই সারা বিশ্বে দেখা যায় কোভিড সংক্রমণ। ফলে গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ।

সরকারের আশা, দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় আগামী মাস থেকে এ কাজ শুরু করা যাবে। এটি প্রণয়ন হলে পর্যটনের সংকট ও সম্ভাবনার সব কিছুই এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

পর্যটন প্রতিমন্ত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড গঠন করে। এর মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে অনেক যায়গায় অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইপি গ্লোবালকে মাস্টার প্ল্যানের কাজ করতে দিয়েছি। এতে ব্রিটিশ, ফেঞ্চ ও আমাদের দেশীয় বিশেষজ্ঞরা আছেন।

‘কাজ পাওয়ার পর তারা কয়েক জায়গায় গিয়েছিল, কিন্তু এর মধ্যে বিশ্বব্যাপি কোভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকার কারণে তারা চেয়েছিল প্রকল্পটি বাতিল করে দেবে। কিন্তু আমরা দেখলাম, পরে যদি আবার নতুন করে শুরু করতে হয়, তাহলে আরও বেশি সময় লাগবে। এ জন্য আমরা পুনরায় তাদের সঙ্গে বৈঠক করি। ফলে কোভিড সহনীয় হলেই তারা আবার আসবে এবং কাজ শুরু করবে।’

পর্যটন সচিব ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোকাম্মেল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল তিনটি ভাগে এই কাজটি শেষ হবে, কিন্তু কোভিডের জন্য এটি বাধাগ্রস্ত হয়। ২০২০ সালের মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। এখন কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

‘তারা (আইপি গ্লোবাল) আগামী অক্টোবর থেকে আবারও ফিরে আসছে। তারা একটি রিভাইজড প্ল্যান দিয়েছে। আশা করছি, ২০২২ সালে ডিসেম্বরের মধ্যে এই মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন হয়ে যাবে। এরপর আমরা পর্যটনের উন্নয়ন কীভাবে সমন্বিতভাবে করব, সেটি পরিকল্পনা করব।’

মহাপরিকল্পনায় যা থাকবে

এই মহাপরিকল্পনায় কী থাকবে জানতে চাইলে পর্যটন সচিব জানান, এতে আইকনিক ল্যান্ড মার্ক ও দেশের ব্র্যান্ডিং দুটিকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘মাস্টার প্ল্যানে অনেক কিছুই থাকবে। যেগুলো বর্তমানে আছে, সেগুলোর পাশাপাশি আমরা নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কারের চেষ্টা করছি। পর্যটন পণ্য, সেবা ও কেন্দ্রগুলো আমরা চিহ্নিত করছি ও উন্নয়ন করছি। যে উপাদানগুলো পর্যটনের জন্য প্রয়োজন সবগুলোই কিন্তু এখানে রয়েছে।

‘এখানে নদী, সমুদ্র, পাহাড় আছে, ঐতিহ্য রয়েছে। পর্যটনের যে উপাদান প্রয়োজন, সবই কিন্তু এখানে আছে। কাজেই মহাপরিকল্পনায় সেগুলোকে ইনক্লুড করে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করছি, যেটি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগবে।’

পর্যটন সচিব বলেন, ‘আইকনিক ল্যান্ড মার্ক ও ব্র্যান্ডিং দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এরই মধ্যে জেলা ব্র্যান্ডিং করে ফেলেছি। তা ছাড়া আইকনিক ল্যান্ডমার্ক নির্ধারণের জন্য কমিটি করা হয়েছে। তারা কাজ করছে। আমাদের কিন্তু বেশ কয়েকটি আইকনিক ল্যান্ডমার্ক রয়েছে।

‘আমাদের এখন যে ব্র্যান্ডিং থিম রয়েছে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’, সেটিই রাখছি। তবে এটাকে ভবিষ্যতে পরিবর্তন করতে হলে যুগের সঙ্গে মিলিয়ে করার চিন্তাভাবনা আছে। আমরা এখন আইকনিক ল্যান্ডমার্কগুলো চিহ্নিত করছি। সেটিও এ মহাপরিকল্পনার অংশ থাকবে।’

অনেক সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও দেশের পর্যটন খাত কেন বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারছে না, জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা মহাপরিকল্পনা না থাকাকেই দায়ী করছেন।

পর্যটন বিষয়ক পত্রিকা বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহেদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের তো পর্যটন পণ্যের অভাব নেই। আমাদের সুন্দরবনের মতো পণ্য আছে, যেটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। আমাদের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত রয়েছে, বুদ্ধিস্ট হ্যারিটেজ রয়েছে, এ রকম অসংখ্য প্রোডাক্ট আমাদের রয়েছে। আমাদের তো কালচারাল হেরিটেজ বা রিলিজিয়াস হেরিটেজ অনেক কিছুই আছে। কিন্তু তারপরেও আমরা কেন পিছিয়ে?

‘শুধু কিছু অবকাঠামো তৈরি করেই পর্যটনের উন্নয়ন হবে না। একটি পর্যটনবান্ধব মহাপরিকল্পনা করতে হবে। আমরা যদি সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড মালয়েশিয়া বা নেপালে যাই, সেখানে কিন্তু আমরা দেখি তারা পর্যটনকে সবচেয়ে প্রাধান্য দেয়। কিন্তু আমাদের এখানে পর্যটন কখনই অগ্রাধিকার পায় না।’

বিদেশি পর্যটক আসার ক্ষেত্রে ভিসা জটিলতা একটি বড় সমস্যা বলেও মনে করছেন তিনি। মহাপরিকল্পননায় এ বিষয়টিও থাকা উচিত বলে মনে করেন কাজী ওয়াহেদুল আলম।

তিনি বলেন, ‘বিদেশি পর্যটক আসার ব্যাপারে আমরা এখনও উদার হতে পারছি না। বেশির ভাগ দেশ এখন ই-ভিসা, অন অ্যারাইভাল ভিসা দিচ্ছে কিন্তু আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভিসা দিতে চাই না। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো উদ্যোগ না নেয়া যায়, তাহলে মানুষ আসবে কীভাবে?’

এ বিভাগের আরো খবর