নথি জালিয়াতির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরখাস্ত কর্মচারী মো. রুবেলের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের রায়ের জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে ঘটেছিল এই নথি জালিয়াতির ঘটনা।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই দিন ঠিক করে দেয়। এর আগে রুবেলের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক)।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘রুবেলকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ১৭ জুন রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। শুনানিতে আদালত রুবেলের দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দাখিল করতে নির্দেশ দিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ঠিক করেছে।’
মামলা থেকে জানা যায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়।
সেই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে নথিটিতে জালিয়াতির ঘটনা ঘটে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা, ছাত্রলীগের নেতা তরিকুলসহ আসামিরা প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন। নথি জালিয়াতির এ ঘটনায় টাকা লেনদেন হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম গত বছরের ৫ মে এ বিষয়ে মামলা করেন।
মামলায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করে ইতিমধ্যে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। আসামিরা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি (বহিষ্কৃত) তরিকুল ইসলাম মমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারী ফাতেমা খাতুন, নাজিম উদ্দীন, রুবেল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফরহাদ হোসেন ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এয়ার কমোডর (অব.) এম আব্দুস সালাম আজাদ।
এর মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এয়ার কমোডর (অব.) এম আব্দুস সালাম আজাদ পলাতক।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে মো. রুবেল ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডেসপাস রাইটার। গত বছরের ১৯ মে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিম্ন আদালতে জামিন খারিজের পর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।