ময়মনসিংহ-জামালপুর রুটের ট্রেনে ডাকাতির সময় বাধা দেয়ায় দুই যাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১৪-এর অধিনায়ক মো. রোকনুজ্জামান।
র্যাব-১৪ সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে রোববার বেলা ১টার দিকে এ তথ্য জানান তিনি।
এর আগে ময়মনসিংহ সদরে অভিযান চালিয়ে শনিবার রাত ১টার দিকে ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা পেশাদার ডাকাত বলে জানায় র্যাব।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র, লুট করা টাকা ও কয়েকটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন, মাকসুদুল হক রিশাদ, হাসান, রুবেল মিয়া ও মোহাম্মদ। তারা ময়মনসিংহ সদরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
অধিনায়ক মো. রোকনুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রেনে ডাকাতি করতে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চারজন দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। গ্রেপ্তার রিশাদ, হাসান ও স্বাধীন টঙ্গী থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন। ট্রেনটি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ফাতেমানগর স্টেশনে থামলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন মোহাম্মদ ও তার এক সহযোগী।
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে চলতে শুরু করলে তারা ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন লুট করা শুরু করেন। একপর্যায়ে সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন ডাকাতরা ওই দুজনের মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সাগর ও নাহিদ ট্রেনের ছাদে লুটিয়ে পড়েন।’
তখন ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে ঢোকার আগে সিগন্যালে ট্রেনের গতি কমলে ডাকাতরা পালিয়ে যান।
অধিনায়ক মো. রোকনুজ্জামান আরও জানান, গ্রেপ্তাররা মূলত সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। তারা ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেলস্টেশন থেকে উঠে ডাকাতি করত। তাদের কিছু সহযোগী ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ফাতেমানগর স্টেশন থেকে উঠে সম্মিলিতভাবে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যেত। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
দুই যাত্রীকে হত্যার ঘটনায় নিহত সাগরের মা হনুফা বেগম শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় আট থেকে ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলায় ওই দিন রাত ৩টার দিকে নগরীর কেওয়াটখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিমুল মিয়া নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার বিকেলে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিকে ময়মনসিংহের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে তোলা হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।