আরও বেশি মানুষকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার আওতায় আনতে ফের বড় পরিসরে টিকা ক্যাম্পেইনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ক্যাম্পেইনে এক দিনে ৮০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হবে।
এই টিকা ক্যাম্পেইন আগামী মঙ্গলবার হবে বলে রোববার বিকেলে দেশের করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন ২৮ সেপ্টেম্বর টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে। সকাল ৯টা থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে। এই ক্যাম্পেইন দেশের ৪ হাজার ৬০০ ইউনিয়নে হবে। এক দিনে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ এই টিকা ক্যাম্পেইনে কাজ করবেন। একই সঙ্গে ৮০ লাখ মানুষ টিকা পাবেন।’
এর আগে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম টিকাদান ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়। ওই সময় যারা করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শেষ হয়। আগের ক্যাম্পেইনে অগ্রাধিকার দেয়া হয় নারী ও বয়স্কদের। সে ক্যাম্পেইনে ৪৫ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, গতবারের মতো আবার আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর টিকা ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে চলমান টিকাদান কর্মসূচি বজায় থাকবে। এখন প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হচ্ছে। তার পাশাপাশি গ্রামে গ্রামে টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে যেতে চায় সরকার। বিশেষ করে যেখানে দারিদ্র জনগোষ্ঠী রয়েছেন, যারা সব সময়ে টিকা নিতে আসতে পারেন না এবং বয়স্ক তাদের টিকা দেয়ার উদ্দেশ নিয়ে টিকা ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৮ তারিখ আমাদের লক্ষ্য ৮০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া। গতবার টিকা ক্যাম্পেইনে ৪৫ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ৮০ লাখ টিকা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমাদের সক্ষমতা আমরা বৃদ্ধি করতে চাই। আশা করি আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারব। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন ২৮ সেপ্টেম্বর। সেই কারণে আমার এই দিন ফের টিকা ক্যাম্পেইন শুরু করছি।
ক্যাম্পেইনে নিবন্ধনকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই ক্যাম্পেইনে নিবন্ধন করে যারা টিকা পাননি তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। ২৫ বছরের ওপরে সবাইকে টিকা দেয়া হবে। ক্যাম্পেইনের শুরুতে প্রথম দুই ঘণ্টা ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক নারী, দুর্গম এলাকার জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে টিকা নেয়ার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসলেও টিকা দেয়া হবে। এবারের ক্যাম্পেইনে গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের টিকা দেয়া হবে না। ক্যাম্পেইনে শুধু প্রথম ডোজ দেয়া হবে।
এক মাস পর ফের ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সারাদেশে একযোগ এই টিকা ক্যাম্পেইন শুরু হবে। যে পর্যন্ত আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে না সেই পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। প্রয়োজন হলে দুই শিফটে টিকা দেয়া হবে। টিকা দেয়া শেষ হলেও গেলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই কেন্দ্রে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।
যেসব কেন্দ্রে টিকার ক্যাম্পেইন
সারা দেশে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ ইউনিয়নে এবং এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা ৪৪৩টি ওয়ার্ডে এই টিকা দেয়া হবে। এবং ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকর্মী এই ক্যাম্পেইনে কাজ করবেন। এর মধ্যে সেচ্ছাসেবক ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন। তারা সবাই মিলে এই বিরাট কর্মকণ্ড পরিচালনা করবে। সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার লোক এই কাজ করবেন। প্রতিটি ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশনে ৩টি করে বুথ এবং পৌরসভায় ১টি বুথ রাখা হবে।