বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জোর করে ঢাবির বিজ্ঞান লাইব্রেরিতে চাকরিপ্রত্যাশীরা

  •    
  • ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৪

গ্রন্থাগারের দরজা খোলার পর শুরুতে শৃঙ্খলা দেখা গেলেও মুহূর্তেই বিশৃঙ্খল পরিবেশ দেখা যায়। নিয়মের তোয়াক্কা না করে লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এ সুযোগে চাকরিপ্রত্যাশীরাও ঢুকে পড়েন। এ সময় দায়িত্বে নিয়োজিত লাইব্রেরির কয়েকজন কর্মচারীকে ধাক্কা এবং ঘুষি দিয়ে ফেলেও দেন তারা।

দেড় বছর পর শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের দরজা। অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রন্থাগার খোলা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে জোর করে ঢুকে পড়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।

এ সময় তাদের রোখার চেষ্টা করে আঘাত পেয়েছেন গ্রন্থাগারের কয়েকজন কর্মচারী।

রোববার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের লাইব্রেরিতে বরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সংবলিত মাস্ক নিয়ে তারা গ্রন্থাগারের গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। মাপা হয় শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা। এরপর তাদের হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে এবং করোনা সনদ যাচাই করে ঢুকতে দেয়া হয় গ্রন্থাগারে।

শুরুতে কিছুটা শৃঙ্খলা দেখা গেলেও খানিক পরই নিয়মের তোয়াক্কা না করে জোর করে গ্রন্থাগারে ঢুকে যায় অনেক শিক্ষার্থী। এ সুযোগে চাকরিপ্রত্যাশীরাও ঢুকে পড়েন। এ সময় দায়িত্বে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মচারীকে ধাক্কা এবং ঘুষি দিয়ে ফেলে দেন তারা।

বাইরের কোনো বই নিয়ে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করা যাবে না, এমন নিয়ম থাকলেও তাও মানেননি শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষার বই হাতে নিয়ে ঢুকে পড়েন তারা।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল বিজ্ঞান লাইব্রেরিতে প্রবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী। সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক নাসির উদ্দীন মুন্সি।

তারা চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের বের হয়ে যেতে বললে কিছু শিক্ষার্থী প্রক্টরের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রক্টর গোলাম রাব্বানী।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমাদের সহযোগিতা করে কি আমরা ভুল করেছি। তোমরা আমাদের এমন স্মৃতি দিও না যে স্মৃতি আমাদের কষ্ট দেয়। তোমাদের প্রতি আমাদের যে মমত্ববোধ সেটি কি আমরা এই দেড় বছরে প্রমাণ করিনি! তোমরা যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী আছ তারা পড়ো। আর যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী না তোমরা আমাদের সহযোগিতা করো। তোমাদের বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।’

লাইব্রেরিয়ান নাসির উদ্দীন মুন্সি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা শিক্ষকরাও তোমাদের কাছ থেকে শিখব। তোমরা এমন কোনো আচরণ করে সেটি নষ্ট করে দিও না।’

কথা শেষ করেই শিক্ষার্থীদের সেখানে রেখেই বের হয়ে যান প্রক্টর এবং গ্রন্থাগারের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষকরা।

পরে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কাছে লাইব্রেরি সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা পড়তে চায়, এটি ইতিবাচক দিক। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।’

গ্রন্থাগারিক নাসির উদ্দীন মুন্সি বলেন, ‘আমাদের সকল আয়োজন থাকার পরও শিক্ষার্থীরা জোর করে ঢুকে পড়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই চাকরিপ্রত্যাশী। যেহেতু ঢুকে পড়েছে তাই আমরা আজ বের করে দিইনি। সামনের দিনে এটি নজরে রাখা হবে।’

বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের জোর করে প্রবেশের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের সচেতনতার জায়গাটি খুবই প্রখর। এটি আমাদের শক্তি। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট সচেতনতা ছিল। আশা করি, এই ধরনের ভূমিকা সবাই পালন করবেন। আমরা শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে শ্রদ্ধাশীল। প্রত্যেকেই যদি আমরা দায়িত্বশীল আচরণ করি তাহলে কিন্তু একটি শিক্ষা অনুকূল পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর