রংপুরের হারাগাছে মাদক কারবারির ছুরিকাঘাতে নিহত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক পিয়ারুল ইসলামের কুড়িগ্রামের বাড়িতে এখন শোকের মাতম।
শরিবার সন্ধ্যা ৬টায় পিয়ারুলের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার মরদেহ এক নজর দেখতে এলাকার লোকজন বাড়িতে ভিড় করেন। পিয়ারুলের মৃত্যুর খবরের পর বাবা-মা ও স্ত্রী হাবিবা খাতুন হেনা বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
লাশের পাশে বসেই পিয়ারুলের অবুঝ দুই শিশু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও এলাকাবাসীর কান্নায় ভারী মাস্টারবাড়ি।
শুক্রবার মাঝরাতে মাদক কারবারি পারভেজ হাসান পলাশের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত পিয়ারুলকে রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, ‘পিয়ারুলের মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না তার পরিবারসহ এলাকাবাসী। সে সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিল। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সে বড়। তার বাবা আব্দুর রহমান মিন্টু চন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।’
পিয়ারুল এক যুগ ধরে পুলিশে কর্মরত। সবশেষ তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের আওতায় হারাগাছ থানায় কর্মরত ছিলেন। তার এক ছেলের বয়স ৭ বছর, অন্যটির দেড় বছর।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার জানান, বেলা সাড়ে ৩টায় এএসআই পিয়ারুল ইসলামের প্রথম জানাজা হয় রংপুর পুলিশ লাইনস মাঠে। দ্বিতীয় জানাজা রাত ৯টায় তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ সময় পুলিশের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী অংশ নেন।
নিহত পিয়ারুল ইসলামের বাবা আব্দুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘আমার সন্তানের মৃত্যু মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে সে। এ জন্য আমি গর্ব অনুভব করি। আমি চাই, আমার ছেলের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক সাজা।’