চলতি বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের আটকে থাকা সেমিস্টার ফাইনাল।
সশরীরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরীক্ষার দিনগুলোতেই শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাস চলবে। তবে সব বিভাগের পরীক্ষার সময়সূচি না পাওয়ায় বাসের শিডিউল তৈরিতে সময় লাগছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন প্রশাসনের।
শনিবার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র পরীক্ষার দিনগুলোতেই পরিবহন চলবে। উদ্দেশ্য যেহেতু পরীক্ষা নেয়া, তাই এ সিদ্ধান্ত।’
বাসের শিডিউল প্রস্তুতির বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীক্ষার সময়সূচি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাসের শিডিউল তৈরি করা যাচ্ছে না। সব বিভাগের চেয়ারম্যানদের কাছে রুটিন চাওয়া হয়েছে। এখন সব বিভাগ থেকে রুটিন না এলে পরে শিডিউল বিপর্যয় হবে। কিছু বিভাগ পরীক্ষার রুটিন পুনরায় সংশোধন করছে। তাই নিশ্চিতভাবে পরীক্ষার রুটিনগুলো পাওয়ার আগে বাসের শিডিউল তৈরি করা যাচ্ছে না।’
৭ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের সঙ্গে ডিন ও চেয়ারম্যানদের একটি বৈঠকে বিভিন্ন বর্ষের আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা ৭ অক্টোবর থেকে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যদি সার্বিক পরিস্থিতির কারণে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয়, তবে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন অনুষদের ডিন সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানদের পরীক্ষা নেয়ার জন্য রুটিন দেয়ার নির্দেশ দেন।
এতে বিভিন্ন বিভাগ সময়সূচি ঘোষণার সঙ্গে রুটিনও প্রকাশ করতে থাকে। তবে পরীক্ষার রুটিন দেয়ার পরপরই দেখা যায়, পূজার ছুটিতেও কিছু বিভাগের পরীক্ষার তারিখ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
পরে ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির এক সভায় ৭ অক্টোবরের আগে এবং পূজার সময় ১১-১৬ অক্টোবর কোনো সেমিস্টার পরীক্ষা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার নতুন এ সিদ্ধান্তের পর অনেক বিভাগেরই রুটিন পরিবর্তন করতে হয়েছে। তবে এখনও সব ডিপার্টমেন্ট রুটিন না দেয়ায় এবং বেশ কয়েকটি বিভাগের রুটিন পরিবর্তন না করায় বাস শিডিউল তৈরি করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে নরসিংদী থেকে নিয়মিত ক্লাস করা তামান্না আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীক্ষা ৭ তারিখ থেকে শুরু হলে বাস কবে থেকে চালু হবে আর কখন চালু হবে? এখনও না জানালে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা তো নিতে হবে।’
মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে ক্লাস করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মেহনাজ ফাহিম বলেন, ‘শুনেছি পরীক্ষার সময় বাস চলবে। কিন্তু কবে থেকে আর কখন চলবে প্রশাসন এখনও কিছু জানায়নি। এমনকি কোনো বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেনি। বাস না পেলে পরে যদি পরীক্ষা মিস হয় তাহলে এর দায়ভার কে নিবে?’
এছাড়া ঢাকার মধ্যে বাসগুলো দুই শিফট করারও দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও বিআরটিসির ভাড়া করা বাসে শিক্ষার্থীরা ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের চারটি জেলায় (নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ ও কুমিল্লা) যাতায়াত করেন।
অভিযোগ রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিআরটিসির পুরোনো ও মেরামত করা বাসগুলো দেয়া হয়। এতে প্রায়ই রাস্তায় বাস নষ্ট হওয়া ও চাকায় আগুন ধরাসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।
বাস শিডিউল প্রকাশের পর জনবল ও গাড়ির সচলতা ইত্যাদি বিষয় তদারকি করে বাস চলবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল।