বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘একচেটিয়া আধিপত্যেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে খরচ বেশি’

  •    
  • ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২১:৪৮

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের জরিপে দেখলাম, একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান মোট বাজারের ৮০ শতাংশ দখল করে রেখেছে। প্রতিযোগিতা কমিশন দ্রুততার সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ করবে।’

মোবাইল ব্যাংকিং খাতে দ্রুত শৃঙ্খলা না ফেরালে এ খাতের পরিণতি হবে ই-কমার্সের মতো। গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সার্ভিস চার্জ আরও কমিয়ে কীভাবে বাজারে প্রতিযোগিতা আনা যায় এবং ছোট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখা যায় সে ব্যাপারে প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ‘মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বাজার প্রতিযোগিতা সৃষ্টিতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক।

মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিযোগিতা কমিশন আইন ২০১২ সালে হলেও আমরা ২০২০ সাল থেকে কাজ শুরু করেছি। তবে এখনও আমাদের লোকবল ও কর্মযজ্ঞে অনেক ঘাটতি। মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় আমরা জানতাম দশটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। কিন্তু পরে মাঠ পর্যায়ের জরিপে দেখলাম, একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান মোট বাজারের ৮০ শতাংশ দখল করে রেখেছে। প্রতিযোগিতা কমিশন দ্রুততার সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘সার্ভিস চার্জ যাতে জনগণের সাধ্য ও সামর্থ্যের মধ্যে থাকে এ বিষয়টিও আমরা দেখবো। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় যেহেতু এ খাতে রেগুলেটরি তাই তাদেরই এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা দরকার।’

‘মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বাজার প্রতিযোগিতা সৃষ্টিতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুভ্রত রায় মৈত্র বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিং খাতে আমরা শুধু নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন সেবা দেই। বায়োমেট্রিক পদ্ধতি করার সময় একজনের আইডি ব্যবহার করে অন্যজন সিম ব্যবহার করার কারণে কিছু অ-নিরাপত্তা এখনও রয়েছে। আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’

গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় সার্ভিস চার্জ আরও কমিয়ে আনা যায় কীভাবে, সে ব্যাপারে প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সকলকেই ভেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, ‘কমিশনগুলো নিজেরা শক্তিশালী না হবার কারণে দাঁত, নখবিহীন কমিশনে পরিণত হয়েছে। একচেটিয়া বাজার আধিপাত্য রোধ করতে প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের ভেতর সমন্বয় না থাকায় বিভিন্ন কোম্পানি ও বাজারে মনোপলি ও মুনাফাখোররা তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর অধ্যাপক খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে একটি কোম্পানি কীভাবে একক আধিপাত্য বিস্তার করল এবং উচ্চ মূল্যের সার্ভিস চার্জ আদায় করল এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা কী তাও ভেবে দেখা দরকার।’

নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা অপারেটররাসহ আরও নতুন নতুন বিনিয়োগ এ খাতে আনা জরুরি।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘একসময় বাংলাদেশে একটি মোবাইল অপারেটর ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ নিত। সেটি কমে এখন ৪৫ পয়সা হয়েছে। কেবলমাত্র অন্যান্য অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকার ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। তাই মোবাইল ব্যাংকিং খাতেও প্রতিযোগিতা আনা গেলেও এর সার্ভিস চার্জ দ্রুত কমে আসবে।’

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজির হোসাইন বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা দ্রুত ফিরিয়ে আনা না গেলে এর পরিণতি হবে ই-কমার্সের মতো। বাজারে দ্রুত আধিপত্য বিস্তারকারী প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার মধ্যে এনে সার্ভিস চার্জ কমিয়ে কীভাবে বাজারে প্রতিযোগিতা আনা যায় এবং ছোট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখা যায় এ ব্যাপারে প্রতিযোগিতা কমিশনকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা মহোদয়ের ক্যাশলেস বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়ন করতে হলে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় সার্ভিস চার্জ কমিয়ে আনা ও বাজার প্রতিযোগিতা সৃষ্টির বিকল্প নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর