বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৭০ বছর পর মা-ছেলের দেখা

  •    
  • ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২১:৪০

শনিবার মায়ের কোলে ফিরে আসা কুদ্দুছ বলেন, ‘এতগুলো বছর পর হারিয়ে যাওয়া মাকে ফিরে পেয়েছি, সে আনন্দ মুখের ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মারা যাওয়ার আগে মায়ের সঙ্গে কয়েকটি দিন কাটানোর ইচ্ছা ছিল, আজ সেটি পূরণ হয়েছে।’

শিশুকালে হারিয়ে যাওয়া কুদ্দুছ ৭০ বছর পর মায়ের সন্ধান পেয়েছেন।

শনিবার ৮০ বছর বয়সী কুদ্দুছ তার মা মঙ্গলুন্নেছার কাছে ফেরেন। মায়ের বয়স এখন ১১০ বছর। মা-ছেলে দুজনেই একে অপরকে দেখে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে তাদের দেখা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আশ্রাফবাদ গ্রামে মা-ছেলের সাক্ষাতের দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান আশপাশের অনেক নারী-পুরুষ।

কুদ্দুছ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের কালু মুন্সির ছেলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে কুদ্দুছ সবার বড়। তার দুই বোনের মধ্যে জোৎস্না আক্তার মারা গেছেন। কুদ্দুছ মুন্সির সাত বছর বয়সে তার বাবা কালু মুন্সি মারা যান। মঙ্গলুন্নেছা ১০ বছর বয়সী কুদ্দুছকে লেখাপড়া করাতে পাশের বাড়ির জামাই নবীনগর উপজেলার পুলিশ সদস্য আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে রাজশাহীর আত্রাই উপজেলায় পাঠান। সেখান থেকে কুদ্দুছ হারিয়ে যান।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, কুদ্দুছ হারিয়ে যাওয়ার পর আত্রাই উপজেলার সিংশাইর গ্রামের সাদেক মিয়ার নিঃসন্তান স্ত্রী তাকে লালন-পালন করেন। ৩০ বছর বয়সে বাগমারা উপজেলার সবেদ মিয়ার মেয়ে শুরুজ্জাহাসকে বিয়ে করে সেখানেই জীবনযাপন করছিলেন কুদ্দুছ মুন্সি। গত ১২ এপ্রিল আত্রাই উপজেলার সিংশাইর গ্রামের এমকে আইয়ূব নামের এক ব্যক্তি কুদ্দুছের হরিয়ে যাওয়ার ঘটনা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেন।

৫ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে আপলোড হওয়া ভিডিওর মাধ্যমে আইয়ূবের সঙ্গে যোগাযোগ করে কুদ্দুছের সঙ্গে দেখা করেন চাচাতো ভাইয়ের নাতি শফিকুল ইসলাম। কুদ্দুছের সঙ্গে তার মাকে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথোপকথনের ব্যবস্থা করে দেন শফিকুল। কুদ্দুছের বাম হাতের কাটা দাগ দেখে চিনতে পারেন মা।

শনিবার মায়ের কোলে ফিরে আসা কুদ্দুছ বলেন, ‘এতগুলো বছর পর হারিয়ে যাওয়া মাকে ফিরে পেয়েছি, সে আনন্দ মুখের ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মারা যাওয়ার আগে মায়ের সঙ্গে কয়েকটি দিন কাটানোর ইচ্ছা ছিল, আজ সেটি পূরণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘হারিয়ে যাওয়ার পর রাজশাহীর আত্রাই উপজেলার সিংশাইর গ্রামের সাদিক মিয়ার স্ত্রী আমাকে ছেলের মতো লালন-পালন করেন। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছি। অনেকবার মা ও বোনদের খুঁজতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। মায়ের কোল যে কতটা শান্তির, তা ভাষায় প্রকাশের নয়। বাকিটা জীবন মাকে নিয়ে কাটিয়ে দিব।’

কুদ্দুছের ছেলে হাফেজ সোহেল মুন্সি বলেন, ‘দাদিকে দেখতে পাওয়া ছিল খুবই অকল্পনীয়। পূর্বে বাবার জন্য প্রায়ই খারাপ লাগত। দাদির কথা চিন্তা করে কষ্টে অনেক কান্নাকাটি করেছে। তবে সেই দূরত্বের আজ অবসান ঘটেছে। আজকে মা-ছেলের মিলনে সকলের চোখজুড়েই সুখের কান্না। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে দাদাকে ফিরে পেলাম। ভিডিও কলে কথা বলিয়ে দেয়ার সময় বড় দাদি মঙ্গলুন্নেছা শুধু একটি কথাই বলেছেন, কুদ্দুছ তুই আয়।’

এ বিভাগের আরো খবর