পটুয়াখালীর একটি মসজিদ থেকে তাবলিগ জামাতের ১৩ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শহরের কলাতলা এলাকার বটতলা জামে মসজিদে শনিবার সকালে তাদের অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাতে তাবলিগ জামাতের সদস্যরা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে শনিবার তাদের অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাবারে বিষক্রিয়া নাকি নেশাজাতীয় কোনো কিছু মেশানো ছিল তা পরীক্ষার পর বলা যাবে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার তাবলিগ জামাতের সদস্য রাসেল আহমেদ জানান, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ দেশের কয়েক জেলা থেকে ১৫ সদস্যকে তিন দিনের চিল্লার (সফর) জন্য কাকরাইল মসজিদ থেকে তাবলিগের আমির তাদের পটুয়াখালীতে পাঠান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে লঞ্চে রওনা হয়ে শুক্রবার ভোরে তারা পটুয়াখালীর হেতালিয়া বাধঘাট এলাকার মারকাজ মসজিদে পৌঁছেন। সেখানকার তাবলিগ কমিটির সিদ্ধান্তে শহরের কলাতলা এলাকার বটতলা জামে মসজিদে পাঠানো হয়।
রাসেল বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমরা যে যার কাজ করি। আমিরের নির্দেশমতো আমরা দিনভর মানুষকে দিনের দাওয়াত দিয়েছি, ইসলামি আলাপ-আলোচনা করেছি। রাতে খাবার খেয়ে আমরা ঘুমাই। তারপর এলাকার এক সাথি জানান তার শরীর খারাপ লাগছে। আমরা তখন মসজিদের সামনে একটু হেঁটে এসে ঘুমাই।’
ফজরে তাবলিগের ওই দুই সদস্য ছাড়া অন্যরা কেউ উঠতে না পারলে মসজিদ কমিটিকে খবর দেন রাসেল। পরে সেই ১৩ জনকে অচেতন অবস্থায় পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি।
পটুয়াখালী মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহমুদুর রহমান জানান, ‘অচেতন ১৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের শারিরিক পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে বলা যাবে কী কারণে তারা অচেতন হয়ে পড়ছিলেন।’
বটতলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. কলিমুল্লাহ জানান, ফজর নামাজের আগে মসজিদের মুয়াজ্জিনের ফোন পেয়ে মসজিদে গিয়ে দেখেন তাবলিগ জামাতের সদস্যরা সবাই ঘুমাচ্ছেন। অনেক ডাকাডাকির পরও কারও ঘুম ভাঙে না।
বটতলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ জানান, তিনিও ফোন পেয়ে সেখানে যান। পরে স্থানীয় মারকাজ মসজিদের ইমামের সঙ্গে আলোচনা করে থানার ওসির পরামর্শে হাসপাতালে নেয়া হয়।
তবে কারও টাকাপয়সা হারানোর ব্যাপারে বা কোনো কিছু খোয়া গেছে এমন খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোরশেদ জানান, ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে অফিসার পাঠানো হয়েছিল। সবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে খাবারেও হয়তো কোনো সমস্যা ছিল।
তিনি বলেন, ‘খাবারে কিছু মেশানো হয়েছিল কি না, তা ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যাবে। মসজিদ কমিটি বা অসুস্থদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তারপরও আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছি।’