ইলিশের ভরা মৌসুম সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়েও লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে তেমন মাছ ধরা পড়েনি। মাসের শেষে অবশেষে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ।
এতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে জেলে, ঘাটের শ্রমিক, আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের মাঝে। দামও নাগালের ভেতরে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এতে স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতা-বিক্রেতা ও আড়তদারদের মধ্যে।
মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, উপযুক্ত আবহাওয়া ও জাটকা নিধনবিরোধী অভিযান সফল হওয়ায় ফল মিলছে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে নিবন্ধিত ৪২ হাজার। রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করেন তারা।
সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, মতিরহাট, লুধুয়া, আলেকজান্ডার, সাহেবের হাট, চেয়ারম্যানঘাটসহ ছোট-বড় মাছঘাট রয়েছে প্রায় ৩০টি। ইলিশ ধরা পড়ায় এগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় জমে উঠেছে।
আগামী কয়েক দিনে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়বে বলে আশা করছেন জেলে ও আড়তদাররা।
বেশি ধরা পড়ায় ইলিশের দামও কমেছে বেশ। ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহ আগে এক কেজি ওজনের এক হালি মাছ বিক্রি হতো ৫-৭ হাজার টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩-৪ হাজার টাকায়। এ ছাড়া এক কেজির নিচে এক হালি মাছ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মজুচৌধুরীরহাট এলাকার জেলে রফিকুল ইসলাম, মোহন মাঝি সরাফত উল্যাহসহ কয়েকজন জেলে জানান, মেঘনায় ইলিশ কম পাওয়া গেলেও মূলত দক্ষিণ সাগরে ধরা পড়া ইলিশ এখন আনা হচ্ছে। মাছের আমদানি বাড়ায় দামও কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
মতিরহাট এলাকার আড়তদার লিটন জানান, গত পাঁচ দিন ধরেই মাছের সরবরাহ ভালো। নদীতে জেলেরাও মাছ পাচ্ছেন। পাশাপাশি আড়তদাররা খুশি। ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মণপ্রতি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৭ হাজার টাকা। আর এক থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশের হালি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা।
আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। মা ইলিশ রক্ষায় এবং মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ সময় মাছ ধরা, বিক্রি, মজুত, আহরণ করা যাবে না।
যারা সরকারের এ আইন অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘উপযুক্ত আবহাওয়া ও জাটকা নিধনবিরোধী অভিযান সফল হওয়ায় এর সুফল মিলছে। বর্তমানে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ইলিশ। এতে খুশি জেলে, শ্রমিক ও আড়তদাররা।
‘আরও ইলিশ পাওয়া যাবে। গত বছর ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টন। এবার ২৫ হাজার টন নির্ধারণ করা হয়েছে।’