বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝুমনের মুক্তি কবে

  •    
  • ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৬:৩২

আইনজীবীদের বরাত দিয়ে ঝুমনের ভাই নুপুর দাস বলেন, ‘আদালতের জামিন আদেশের সার্টিফাইড কপি কারাগারে এসে পৌঁছালে ঝুমন মুক্তি পাবে। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি। রোববারের দিকে সার্টিফাইড কপি কারাগারে এসে পৌঁছাতে পারে।’

ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে গ্রেপ্তার ঝুমন দাস আপন জামিন পেলেও কারাগার থেকে এখনও মুক্ত হননি।

সুনামগঞ্জের শাল্লার এই যুবক এখনও আছেন জেলা কারাগারে।

ঝুমনের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আদালতের জামিন আদেশ কারাগারে না পৌঁছানোয় তার মুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে। ফলে অপেক্ষা বাড়ছে ঝুমনের পরিবারের।

আইনজীবীদের ধারণা, রোববার ঝুমনের জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছাতে পারে।

শর্তসাপেক্ষে বৃহস্পতিবার এক বছরের জন্য ঝুমনকে জামিন দেয় হাইকোর্ট।

আইনজীবীদের বরাত দিয়ে ঝুমনের ভাই নুপুর দাস বলেন, ‘আদালতের জামিন আদেশের সার্টিফাইড কপি কারাগারে এসে পৌঁছালে ঝুমন মুক্তি পাবে। শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি। রোববারের দিকে সার্টিফাইড কপি কারাগারে এসে পৌঁছাতে পারে। ফলে রোববারের আগে তার মুক্তি মিলছে না।’

সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার শরীফুল আলম শুক্রবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝুমন দাসের জামিনের খবর গণমাধ্যমের মাধ্যমে শুনেছি। তবে এখনও কোনো আদেশ পাইনি।

‘হাইকোর্টের জামিন আদেশ প্রথমে সুনামগঞ্জের নিম্ন আদালতে এসে পৌঁছবে। সেখান থেকে বেইল অর্ডার আসলে আমরা তার মুক্তির ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

জেলা আদালতে ঝুমনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেবাংশু শেখর দাশ।

তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের জামিনের কাগজপত্র সুনামগঞ্জে আসার পর আমরা সংশ্লিষ্ট আদালতে জামিননামা দাখিলের আবেদন করব। আদালতের আদেশের কপি কারাগারে গেলেই তিনি মুক্তি পাবেন।’

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার ঝুমনের জামিনের আদেশ দেয়।

ঝুমনকে এক বছরের জন্য জামিন দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে শর্ত দেয়া হয়েছে। শর্তে আরও আছে, আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি যেতে পারবেন না সুনামগঞ্জের বাইরেও।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সুব্রত চৌধুরী, নাহিদ সুলাতানা যুথি ও মো. আশরাফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ‘শানে রিসালাত সম্মেলন’ নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন।

এই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।

মামুনুলের সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তার অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

পরদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম।

শাল্লায় হামলার ঘটনায় শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম, স্থানীয় হাবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ও ঝুমন দাসের মা নিভা রানী তিনটি মামলা করেন। তিন মামলায় প্রায় ৩ হাজার আসামি। পুলিশ নানা সময়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই এখন জামিনে।

শুধু জামিন পাচ্ছিলেন না ঝুমন দাস। বিচারিক আদালতে পাঁচ দফা চার জামিন আবেদন নাকচ করেন বিচারক। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছিল।

এর মধ্যে জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন ঝুমন দাস, পেলেন জামিন।

ঝুমনের স্ত্রী সুইটি রানী দাস বলেন, ‘তার জামিনের খবরে আমরা খুশি। এখন তিনি কারাগার থেকে দ্রুত মুক্তি পেয়ে আমাদের কাছে ফিরে আসবেন, এটাই চাই।’

এ বিভাগের আরো খবর